দেশে ইসরায়েলের পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের দাবি
জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমের সামনে ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশে ইসরায়েলের পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধের জোরালো দাবি উঠেছে। শুক্রবার (১১ মার্চ) জুমার নামাজের পর এই বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এই দাবির পাশাপাশি ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করা দোকান ও মার্কেট বয়কটের আহ্বান জানানো হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, আল কুদস কমিটিসহ আরও কয়েকটি ইসলামি প্ল্যাটফর্ম। তারা ভিন্ন ভিন্ন ব্যানারে ইসরায়েলবিরোধী কর্মসূচির আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তারা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান এবং মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে এই সংকটে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনের পতাকা, প্রতিবাদী ব্যানার এবং ফেস্টুন প্রদর্শন করেন, যা গাজার জনগণের প্রতি তাদের সংহতির প্রতীক।
ইসলামী যুব আন্দোলনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, “ইসরায়েলের আগ্রাসন শুধু ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে একটি যুদ্ধ। বিশ্ব সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহ এখনো এই সংকটে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি।” তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, ইসরায়েলি পণ্য আমদানি ও বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হোক এবং পররাষ্ট্রনীতিতে এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেওয়া হোক।
সংগঠনের মহানগর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নুরুল ইসলাম বলেন, “ইসরায়েল যে বর্বরতা চালাচ্ছে, তা শুধু ফিলিস্তিন নয়, পুরো মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, ইসরায়েলি পণ্য নিষিদ্ধ করা হোক। যারা গণহত্যায় জড়িত, তাদের সঙ্গে কোনো বাণিজ্যিক বা কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ।” তিনি আরও বলেন, এই পণ্য বয়কটের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ ফিলিস্তিনের প্রতি তাদের সমর্থন জানাতে পারে।
সমাবেশে সহসভাপতি মুফতি শওকত ওসমান বলেন, “গাজায় প্রতিদিন শিশুরা বোমায় ছিন্নভিন্ন হচ্ছে। মায়েরা সন্তানের লাশ কাঁধে নিচ্ছেন। আমরা আর কতদিন এই অত্যাচার চুপচাপ দেখব? মুসলমান হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।” তিনি বাংলাদেশের জনগণ ও রাষ্ট্রকে এই বিষয়ে আরও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশের পর বিক্ষোভকারীরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলে তারা ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘বিশ্ব মুসলিম ঐক্য গড়ো, ফিলিস্তিন স্বাধীন কর’, ‘ফিলিস্তিনের রক্ত বৃথা যেতে দেব না’, ‘গণহত্যা বন্ধ কর, ফিলিস্তিন স্বাধীন কর’—এমন স্লোগান দেন। এই স্লোগানগুলো ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি তাদের গভীর সংহতি ও ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে।