ছয় বছর পর আবারও ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংস
২০১৮ সালে ঘরোয়া ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ে বসুন্ধরা কিংসের আবির্ভাবের পর থেকেই শুরু হয় নতুন এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। সেই বছরের ফেডারেশন কাপের ফাইনালেই প্রথমবার মুখোমুখি হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী ঢাকা আবাহনী ও নতুন আগন্তুক বসুন্ধরা কিংস। তবে ম্যাচটির স্মৃতি ফুটবলপ্রেমীদের মনে এখনো উজ্জ্বল, কারণ খেলার উত্তাপ ছাড়িয়ে তা রূপ নিয়েছিল তুমুল মারামারিতে। সেই রোমাঞ্চকর অধ্যায়ের ছয় বছর পর আবারও ফেডারেশন কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে এই দুই দল।
আজকের এই ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ময়মনসিংহের রফিক উদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া স্টেডিয়ামে। আবাহনীর কোচ মারুফুল হক, যিনি নিজেই এই শহরের সন্তান, শিরোপা জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। দেশের ঘরোয়া ফুটবলের প্রায় সব ট্রফিই কোচ হিসেবে জেতা এই অভিজ্ঞ কোচ বলেন, ‘কার্ড সমস্যার কারণে আমাদের ডিফেন্ডার বাবলুকে পাচ্ছি না। তারপরও আমি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে পুরোপুরি আশাবাদী।’
চলতি মৌসুমে বসুন্ধরা কিংসকে দুবার পরাজিত করেছে আবাহনী, যা তাদের আত্মবিশ্বাসের বড় উৎস। মারুফুল হক বলেন, ‘বসুন্ধরা শক্তিশালী একটি দল। তাদের তো আর বলে কয়ে হারানো যায় না। তবে আমাদের দলে দুই বিদেশি যোগ দেওয়ায় শক্তি বেড়েছে। আর শেষ দুই ম্যাচে তাদের হারিয়েছি। খেলোয়াড়দের নিবেদন আমাকে ভীষণ আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।’
অন্যদিকে, এই মৌসুম বসুন্ধরা কিংসের জন্য তেমন সুখকর নয়। প্রিমিয়ার লিগে তারা বর্তমানে মোহামেডানের চেয়ে দশ পয়েন্ট পিছিয়ে, সাত ম্যাচে এই ব্যবধান ঘোচানো প্রায় অসম্ভব। ফলে লিগ শিরোপার দৌড় থেকে কার্যত ছিটকে গেছে তারা। এখন তাদের একমাত্র লক্ষ্য ফেডারেশন কাপের ট্রফি ধরে রাখা। গত আসরের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস দলের সিনিয়র খেলোয়াড় তপু বর্মণ বলেন, ‘আমরা দু’টি কঠিন ম্যাচ খেলে ফাইনালে এসেছি। ফাইনালে নিজেদের সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিতে চাই।’
যদিও মৌসুমটা হতাশার, তবে শুরুটা হয়েছিল আশাজাগানিয়া সাফল্যে। ইউরোপের আদলে এই মৌসুমের শুরুতেই ‘চ্যালেঞ্জ কাপ’-এর আয়োজন করা হয়, যেখানে লিগ ও কাপজয়ীরা মুখোমুখি হয়। সেই ম্যাচে মোহামেডানকে হারিয়ে ট্রফি ঘরে তোলে বসুন্ধরা কিংস। আজকের ফাইনালে সেই জয় পুনরাবৃত্তির প্রত্যাশায় মাঠে নামবে তারা।
ফেডারেশন কাপের এই হাইভোল্টেজ ফাইনাল ঘিরে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ, আর ফলাফল যাই হোক—মাঠে যে উত্তেজনার পারদ থাকবে চূড়ায়, তা বলাই বাহুল্য।