ঈদ সামনে, মসলার বাজারে স্বস্তি—তবে ক্রেতা নেই
আগামী ৭ জুন দেশে উদযাপিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব, পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে রাজধানীর বাসিন্দারা পশু কোরবানির প্রস্তুতির পাশাপাশি রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় মসলা কেনাকাটায় মনোযোগ দিচ্ছেন। তবে এবার ব্যতিক্রম এক চিত্র দেখা গেছে মসলার বাজারে—প্রতি বছর ঈদের আগে যখন মসলার দাম বেড়ে যায়, এবার উল্টো বেশিরভাগ মসলার দাম কমেছে। একমাত্র এলাচ ছাড়া অন্যান্য সব মসলার দাম কম থাকায় ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেলেও, কাঙ্ক্ষিত বিক্রি না হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।
৩ জুন রাজধানীর মৌলভীবাজারে গিয়ে দেখা যায়, মসলার পাইকারি দোকানগুলোতে ভিড় নেই বললেই চলে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, এলাচ বাদে সব ধরনের মসলার দাম কম থাকলেও এখনও ঈদের কেনাকাটার ভিড় জমেনি। এমনকি খুব শিগগির দাম বাড়ার সম্ভাবনাও নেই।
বর্তমানে পাইকারি দরে এলাচ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪২০০ থেকে ৫৬৫০ টাকায়, যা আগের তুলনায় বেশি। তবে জিরা বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮২০ টাকা, দারুচিনি ৪৪০-৪৮০ টাকা, লবঙ্গ ১২৮০-১৭০০ টাকা, গোলমরিচ ১১৪০-১২০০ টাকা, জয়ফল ১২৪০-১২৭০ টাকায়। কিসমিস বিক্রি হচ্ছে ৫৪৫-৭২০ টাকা, আলুবোখরা ৪৬০-৪৭০ টাকা এবং তেজপাতা ১২০ টাকা কেজিতে। বেশিরভাগ মসলার দাম গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কম।
হাবিব অ্যান্ড সন্সের মালিক মোহম্মদ হাবিব জানান, ‘কোরবানির ঈদের আগে মসলার বাজারে সাধারণত ভিড় থাকে। এবার আশানুরূপ ক্রেতা নেই। মনে হচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীরা আগেভাগেই মসলা কিনে রেখেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এবার মসলার দাম কমেছে, যা ব্যতিক্রম। শিগগির দাম বাড়ারও সম্ভাবনা দেখছি না।’
অপর ব্যবসায়ী সাইদ বলেন, ‘এই সময়ে যেভাবে লোকজন ভিড় করে মসলা কিনে, এবার সেটার কিছুই দেখছি না। বাজারে আমদানি পর্যাপ্ত এবং সিন্ডিকেট না থাকায় দামও বাড়েনি।’
মসলার দোকানে আসা সরকারি কর্মকর্তা শাহাজান আলী বলেন, ‘মৌলভীবাজার থেকেই সবসময় মসলা কিনি। এখান থেকে কিনলে অনেকটা কম দামে পাওয়া যায়, আর তা কয়েক মাস ব্যবহার করা যায়।’
আরেক ক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, ‘এবারের দাম খুবই সন্তোষজনক। এলাচ ছাড়া অন্য সবকিছুর দাম কম। তবে এই দাম কতদিন থাকবে, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। সরকারের উচিত নিয়মিত বাজার মনিটর করা।’
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে এবার মসলার বাজারে মূল্য হ্রাসে স্বস্তি মিললেও কেনাকাটায় এখনো সাড়া পড়ে না যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। তবে অনেকেই আশাবাদী, ঈদের আগের দিনগুলোতে ক্রেতার চাপ বাড়তে পারে।
