ইয়েমেনে বাঁচার জন্য সহায়তা প্রয়োজন ২ কোটি মানুষের – জাতিসংঘ
ইয়েমেনের মাটিতে যেন দুঃখের শেষ নেই। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন বলছে, দেশটির প্রায় ২ কোটি মানুষ এখন জীবন বাঁচাতে মানবিক সহায়তার অপেক্ষায়। দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাত, অর্থনৈতিক ধস, খাদ্য সংকট আর রোগের প্রকোপে দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। এই খবর শুনে মনটা ভারী হয়ে ওঠে, কারণ এর পেছনে লুকিয়ে আছে অসংখ্য পরিবারের অশ্রু আর হাহাকার।
জাতিসংঘের মতে, ইয়েমেনের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ ২১.৬ মিলিয়ন মানুষ, সাহায্য ছাড়া টিকে থাকতে পারছে না। এর মধ্যে ১৭ মিলিয়নের বেশি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রতি দুই জনের একজন শিশু তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত। একজন মা, নাজওয়া, যিনি তিন সন্তানকে হারিয়েছেন, বলেন, “আমার বাচ্চারা খাবারের অভাবে দিন দিন ক্ষয়ে গেছে। আমি শুধু তাকিয়ে দেখেছি, কিছুই করতে পারিনি।” এই কথাগুলো শুনলে বোঝা যায়, সেখানকার মানুষের জীবন কতটা কঠিন।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, ৪৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। হাসপাতালগুলোর অর্ধেকের বেশি ধ্বংস হয়ে গেছে বা কাজ করছে না। ওষুধ, বিদ্যুৎ, আর চিকিৎসকের অভাবে রোগীরা অসহায়। কলেরা, মিজলসের মতো রোগ ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। জাতিসংঘের কর্মকর্তা টম ফ্লেচার বলেন, “আমরা শুধু সংখ্যা নিয়ে কথা বলছি না, এটা মানুষের জীবনের গল্প। তাদের বাঁচাতে তহবিল দরকার, এখনই।”
২০২৪ সালে জাতিসংঘ ২৭০ কোটি ডলারের সাহায্য চেয়েছিল, কিন্তু পেয়েছে মাত্র অর্ধেক। ফলে খাদ্য বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা কমে গেছে। একজন ত্রাণকর্মী বলেন, “আমরা যতটুকু পারি করছি, কিন্তু এটা যথেষ্ট নয়।” ইয়েমেনের এই সংকট শুধু সংঘাতের ফল নয়, জলবায়ু পরিবর্তন, খরা, আর বন্যাও এতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। সবাই মিলে যদি এগিয়ে না আসি, তবে এই ২ কোটি মানুষের কান্না আরও গভীর হবে।