বুধবার, ১৪ই মে, ২০২৫| রাত ৮:৪৩

দিনে কতবার গোসল করা উচিত এবং কখন? চিকিৎসকের পরামর্শ

প্রতিবেদক
staffreporter
মে ১৪, ২০২৫ ৪:১৩ অপরাহ্ণ
দিনে কতবার গোসল করা উচিত এবং কখন? চিকিৎসকের পরামর্শ

দিনে কতবার গোসল করা উচিত এবং কখন? চিকিৎসকের পরামর্শ

গরমকালে অনেকেই দিনে একাধিকবার গোসল করে স্বস্তি খোঁজেন, কেউ কেউ আবার রাতে ঘুমের আগে গোসলকে বেশি প্রাধান্য দেন। কেউ সকালে, কেউ দুপুরে, আবার কেউ সারাদিনের কাজ শেষে সন্ধ্যায় গোসল করতে পছন্দ করেন। কিন্তু আদৌ দিনে কতবার গোসল করা উচিত এবং কোন সময়টা শরীরের জন্য সবচেয়ে ভালো—এ নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে। এ বিষয়ে মত দিয়েছেন ধানমন্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিসিন কনসালট্যান্ট ডা. সাইফ হোসেন খান।

দিনে একবার গোসলই যথেষ্ট

গরমে বারবার গোসল আরামদায়ক মনে হলেও, চিকিৎসকদের মতে এটা ত্বকের জন্য সব সময় ভালো না। দিনে একাধিকবার গোসল করলে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট হতে পারে। আমাদের ত্বকে কিছু উপকারী জীবাণু থাকে, যেগুলো একাধিকবার সাবান ব্যবহার বা ঘন গোসলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় প্রতিদিন একবার গোসল করাই যথার্থ। পাশাপাশি অতিরিক্ত পানি ব্যবহারে পানির অপচয় হয়, যা বৈশ্বিক পানিসংকটের দিক থেকেও চিন্তার বিষয়। তাই বারবার গোসল না করে বিকল্প উপায়ে শরীর ঠান্ডা রাখা উচিত।

সঠিক সময় কখন?

গোসলের উপযুক্ত সময় নির্বাচন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিবেচ্য বিষয় হলো আপনি কতটা সময় বাইরে কাটাচ্ছেন এবং কোন কাজ করছেন। বাইরের রোদে বা ধুলাবালিতে ঘোরাঘুরি করে বাসায় ফিরলে গোসল একান্ত প্রয়োজন। অনেকে রাতে ঘুমের আগে গোসল করে থাকেন, তবে চিকিৎসকের মতে, এই অভ্যাসের পরিবর্তে দুপুর বা বিকেলে বাড়ি ফিরে গোসল করাই ভালো। কারণ এরপর আর ভারী কোনো কাজ না থাকায় শরীর ঘামে না বা গরম হয় না। যাঁরা ঘরে থাকেন, তাঁরা দুপুরে রান্নার কাজ শেষ করে গোসল করলে ভালো অনুভব করবেন।

পানির তাপমাত্রা ও ব্যবহারেও সচেতনতা জরুরি

দুপুর বা বিকেলের দিকে রোদে পানি গরম হয়ে যেতে পারে, তাই সকালের দিকেই পানি বালতিতে ভরে ঢেকে রাখা ভালো। এতে গোসলের সময় ঠান্ডা পানি পাওয়া যাবে। যারা শাওয়ার বা বাথটাবে গোসল করেন, তাদের তুলনায় বালতিতে গোসল করলে পানির অপচয় অনেক কম হয়। সেইসঙ্গে বালতির নিচের জমে থাকা ময়লাযুক্ত পানি গাছের গোড়ায় ব্যবহার করে পানি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা যায়।

অভ্যাস অনুযায়ী গোসল করলেও সমস্যা নেই

যাঁরা সকালে বা রাতে নির্দিষ্ট সময় গোসল করতে অভ্যস্ত, তারা সেই অভ্যাস বজায় রাখলেও ক্ষতি নেই। তবে বাইরে থেকে ফিরে গোসল না করতে পারলে অন্তত হাত, মুখ, পা ভালোভাবে ধুয়ে নেওয়া জরুরি। পাতলা সুতি ফুলহাতা পোশাক, প্যান্ট বা পায়জামা পরলে রোদ ও ধুলার ক্ষতি কম হয়। শরীরের যে অংশে বেশি ঘাম হয়, তা তোয়ালে বা ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিলেও অনেকটা স্বস্তি মেলে। অতিরিক্ত গরমে বরফের টুকরো কাপড়ে পেঁচিয়ে কিছুক্ষণ বগলের নিচে ধরলে শরীর ঠান্ডা হয়।

সবশেষে, গোসল মানেই শুধু পরিশ্রান্ত শরীরকে আরাম দেওয়া নয়—এটা এক ধরনের যত্ন। তবে যতটা দরকার, ততটাই করা ভালো; না হলে উপকারের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি থাকে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - সর্বশেষ