স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানালেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আজ ২৬ মার্চ, ২০২৫। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। এই ঐতিহাসিক দিনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বাংলাদেশের জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি এই শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এই দিনটি বাংলাদেশের জন্য শুধু স্বাধীনতার স্মৃতি নয়, বরং ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।
মার্কো রুবিও তার বিবৃতিতে বলেন, “২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আমি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই উদযাপন বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এসেছে, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতিকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করছে। এটি বাংলাদেশের জনগণকে তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের সুযোগ দেবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উজ্জ্বল ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশ স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর অর্জিত এই স্বাধীনতা আজও জাতির গর্বের প্রতীক। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বার্তা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন বাংলাদেশ তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য নতুন পথ খুঁজছে। রুবিও বলেন, “ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব অব্যাহত রাখতে উন্মুখ।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই শুভেচ্ছা দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতাকে তুলে ধরে। তিনি বাংলাদেশের জনগণের প্রতি উষ্ণ শুভকামনা জানিয়ে বলেন, “এই বিশেষ দিনে আমি বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি এবং আমাদের উভয় দেশকে নিরাপদ, শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি।” এই বার্তা বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করে।
বাংলাদেশে এই দিনটি জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। সারা দেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কুচকাওয়াজ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপিত হয়। এবারের উদযাপনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে। রুবিও তার বক্তব্যে এই প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যা জনগণের কণ্ঠকে গুরুত্ব দেবে।”
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বার্তা কেবল শুভেচ্ছাই নয়, বরং বাংলাদেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক জোরদারের একটি ইঙ্গিত। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে। এই প্রেক্ষিতে রুবিওর বার্তা বাংলাদেশের জনগণের জন্য শুধু উৎসাহব্যঞ্জক নয়, ভবিষ্যৎ সহযোগিতার দিকেও আলোকপাত করে।
বাংলাদেশের জনগণ এই শুভেচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এই বার্তাকে দুই দেশের মৈত্রীর প্রতীক হিসেবে দেখছেন। একই সঙ্গে, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথচলায় আন্তর্জাতিক সমর্থনের গুরুত্বকেও তুলে ধরেছে। স্বাধীনতা দিবসের এই উদযাপন বাংলাদেশের অতীত গৌরব এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার এক অনন্য সংমিশ্রণ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।