মেসিদের ইন্টার মায়ামি ধুঁকছে, বিদায়ের পথে মাশ্চেরানো?
মেজর সকার লিগের (এমএলএস) গত মৌসুমে ইতিহাস গড়ে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জন করে আলোচনায় এসেছিল লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি। সেই কৃতিত্বের ফলেই যুক্তরাষ্ট্রের এই ক্লাব জায়গা করে নেয় ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে। তবে চলতি মৌসুমে দলটির পারফরম্যান্স একেবারেই ভিন্ন চিত্র তুলে ধরেছে। সর্বশেষ ৮ ম্যাচে কেবল একটি জয় পেয়েছে তারা এবং হজম করেছে ২৩টি গোল। এই দুর্দশার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন দলের কোচ হাভিয়ের মাশ্চেরানো।
আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্ডার মাশ্চেরানো নিজেই দলের এই দুর্বল পারফরম্যান্সের দায় স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমাদের স্বাধীনভাবে খেলতে হবে। শুধু তখন নয়, যখন আমরা দুই গোলে পিছিয়ে পড়ি—বরং প্রথম মিনিট থেকেই এই মনোভাব দরকার। এখানে দায় আমার, তোমরা শুধু ফুটবল খেলো, ভয় পেও না।”
মাঠে খেলোয়াড়দের মানসিকতা নিয়েও কথা বলেন তিনি, “দিনশেষে এটি একটি খেলা। আমাদের সেটি নিয়মমাফিক খেলতে হবে। যদি আমরা নিজেদের খেলাটা ভুলে যাই, তাহলে জেতা কঠিন হয়ে যাবে। আমি সবসময় খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস দেওয়ার চেষ্টা করি।”
তবে কোচকে ঘিরে সমালোচনা মানতে নারাজ ইন্টার মায়ামির ডিফেন্ডার নোয়াহ অ্যালেন। তার মতে, “সমালোচনাগুলো আমার কাছে ঠিক মনে হয় না। মাঠে খেলি আমরা, কোচ তো বাইরে থেকে শুধু নির্দেশ দেন। ফলাফল খারাপ হলে প্রথম দায় খেলোয়াড়দের নেওয়া উচিত।”
এই অবস্থায় মাশ্চেরানোর প্রথম মৌসুমেই তার চাকরি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ডেভিড বেকহ্যামের মালিকানাধীন ক্লাবটি ইতোমধ্যে নতুন কোচ খুঁজতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন ক্লাব আমেরিকার বর্তমান ম্যানেজার আন্দ্রে জার্দিন, যিনি মেক্সিকান ক্লাবটিকে তিনটি লিগা এমএক্স শিরোপা জিতিয়েছেন এবং ইন্টার মায়ামির শীর্ষ কর্তা আলবার্তো মারেরোর সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও জর্দি আলবার মতো অভিজ্ঞ তারকাদের নিয়েও দলটি এখন পর্যন্ত সাফল্য পায়নি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ ১০ ম্যাচে কেবল দুটি জয়ে রয়েছে মায়ামি। এমএলএসে টেবিলের শীর্ষে থেকে শেষ করা দলটি এখন নেমে এসেছে ইস্টার্ন কনফারেন্সে সপ্তম স্থানে। যা মাশ্চেরানোর অবস্থান আরও নড়বড়ে করে তুলেছে।
গত মৌসুমে কোচ জেরার্দো ‘টাটা’ মার্টিনোর অধীনে সাপোর্টার্স শিল্ড জিতে ক্লাব বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছিল ইন্টার মায়ামি। তবে মৌসুম শেষেই পদত্যাগ করেন তিনি, আর তার স্থলাভিষিক্ত হন মাশ্চেরানো। জুন-জুলাইয়ে ক্লাব বিশ্বকাপে মায়ামিকে মাঠে নামাবেন কি না, নাকি তার আগেই নতুন কোচ আসবে—তা এখন সময়ই বলে দেবে।