অ্যানিমে নিয়ে আগ্রহকে পুঁজি করে ছড়ানো হচ্ছে ম্যালওয়্যার
জাপানি অ্যানিমেশন, যাকে আমরা ‘অ্যানিমে’ নামে চিনি, তা এখন বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তাকেই হাতিয়ার বানিয়ে নতুনভাবে ম্যালওয়্যার ছড়াতে শুরু করেছে সাইবার অপরাধীরা। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, হ্যাকাররা এখন অ্যানিমে-ভিত্তিক ফিশিং আক্রমণকে ম্যালওয়্যার ছড়ানোর কার্যকর কৌশল হিসেবে ব্যবহার করছে।
সাইবার সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান ক্যাসপারস্কি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সময়ে বিশ্বজুড়ে এমন আক্রমণের সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়েছে। এসব হামলায় মূলত ব্যবহার করা হচ্ছে ভুয়া ওয়েবসাইট, বিপজ্জনক ডাউনলোড লিংক এবং বিভিন্ন ধরনের ম্যালওয়্যার ফাইল, যেগুলোর মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ডিভাইসে অনুপ্রবেশ করে হ্যাকাররা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০০০ সালের পর যেসব তরুণ জন্ম নিয়েছে, অর্থাৎ ‘জেন-জি’ প্রজন্মের প্রায় ৬৫ শতাংশই নিয়মিত অ্যানিমে দেখে। ফলে তারাই এই ধরনের সাইবার আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু। হ্যাকাররা সাধারণত ফাঁস হওয়া পর্ব, এক্সক্লুসিভ ট্রেলার অথবা বিনামূল্যে প্রিমিয়াম কনটেন্টের লোভ দেখিয়ে তরুণদের ফাঁদে ফেলে। ব্যবহারকারীরা এসব লিংকে ক্লিক করলেই তাদের ডিভাইসে শুরু হয় ম্যালওয়্যারের আক্রমণ।
ক্যাসপারস্কির রিপোর্ট অনুযায়ী, কিছু জনপ্রিয় অ্যানিমে সিরিজের নাম ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি আক্রমণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—
- নারুতো – প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজারবার আক্রমণ
- ডেমন স্লেয়ার – প্রায় ৪৪ হাজারবার
- অ্যাটাক অন টাইটান, ওয়ান পিস, জুজুৎসু কাইসেন – হাজার হাজারবার
শুধু অ্যানিমেই নয়, বরং জনপ্রিয় কিছু পশ্চিমা ফ্র্যাঞ্চাইজির নামেও ম্যালওয়্যার ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। শ্রেক, স্ট্রেঞ্জার থিংস, টুইলাইট ও ইনসাইড আউট নাম করে চালানো হয়েছে ৪৩ হাজারেরও বেশি আক্রমণ। ২০২৫ সালের শুরুতে শ্রেকের নতুন ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার সময় এই ধরনের হামলার সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যায়।
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, কোনো ওয়েবসাইটে ঢোকার আগে সেটির সত্যতা যাচাই করা, অপরিচিত উৎস থেকে কোনো ফাইল ডাউনলোড না করা এবং সবসময় হালনাগাদ আধুনিক অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করলেই অনেকটাই নিরাপদ থাকা সম্ভব। প্রযুক্তির যুগে সচেতনতা থাকলেই সাইবার বিপদের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়।