হার্ভার্ডের সঙ্গে সব সরকারি চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত সব ধরনের সরকারি আর্থিক চুক্তি বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ মে) জ্যেষ্ঠ এক মার্কিন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি ও সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
এএফপি জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে হার্ভার্ডকে নজিরবিহীন তদারকির আওতায় আনার সর্বশেষ প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, একই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে চিঠি পাঠাবে, যাতে হার্ভার্ডের সঙ্গে তাদের কোনো আর্থিক চুক্তি রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখে সেগুলো বাতিলযোগ্য বা অন্যত্র স্থানান্তরযোগ্য কি না, সে বিষয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, সংশ্লিষ্ট ফেডারেল সংস্থাগুলোকে হার্ভার্ডের সঙ্গে থাকা সব চুক্তি পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন ও সম্মানজনক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড নতুন রাজনৈতিক চাপে পড়তে যাচ্ছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, হার্ভার্ডের প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের সরকারি অনুদান ও আর্থিক চুক্তি এই সিদ্ধান্তের ফলে ঝুঁকিতে পড়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস ও রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল সার্ভিসেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএসএ) এ সংক্রান্ত একটি খসড়া চিঠি প্রস্তুত করেছে। এতে সব সরকারি সংস্থাকে হার্ভার্ডের সঙ্গে তাদের বিদ্যমান চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করে সম্ভব হলে সেগুলো বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিঠির খসড়ায় হার্ভার্ডের বিরুদ্ধে দুটি গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে—এক, তারা এখনও ‘জাতিগত বৈষম্যের’ মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে; দুই, ইহুদিবিদ্বেষী ঘটনার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে ‘উদ্বেগজনক উদাসীনতা’ প্রদর্শন করছে, যা ইহুদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশল হিসেবে দেখছেন। প্রশাসনের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফিলিস্তিনপন্থি ছাত্র আন্দোলন এবং জাতিগত বৈচিত্র্যকে উৎসাহিত করার মাধ্যমে ‘চরমপন্থা ও বৈষম্য’ ছড়াচ্ছে।