বৃহস্পতিবার, ৫ই জুন, ২০২৫| বিকাল ৪:০২

ওষুধশিল্পে কাঁচামাল উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথে বাংলাদেশ

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১১, ২০২৫ ৭:২৭ অপরাহ্ণ
ওষুধশিল্পে কাঁচামাল উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথে বাংলাদেশ

ওষুধশিল্পে কাঁচামাল উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথে বাংলাদেশ

দেশে উৎপাদিত ওষুধের প্রায় ৯৫ শতাংশ কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীল—এই চিত্র বদলে দেওয়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের সুপারিশ করছে। এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে ওষুধশিল্পে স্বনির্ভর করার পাশাপাশি ওষুধের দাম জনগণের নাগালে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর দারুস সালাম এলাকায় বিআইএইচএস জেনারেল হাসপাতালে বাংলাদেশ এপিআই অ্যান্ড ইন্টারমিডিয়ারিস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএআইএমএ) সঙ্গে এক বৈঠকে এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। তিনি বলেন, “আমরা দেশে কাঁচামাল উৎপাদনের সক্ষমতা গড়ে তুলতে চাই। এজন্য প্রণোদনা, ট্যাক্স-ভ্যাট ছাড়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকিসহ বিভিন্ন সহায়তার সুপারিশ করা হবে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই পদক্ষেপ শুধু আমদানি নির্ভরতা কমাবে না, বরং ওষুধের দামও সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখবে।

ডা. আজাদ আরও বলেন, “বর্তমানে আমরা ওষুধ তৈরির কাঁচামালের ৯৫ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করি। এটি আমাদের জন্য একটি বড় ঝুঁকি। বিশ্বে মুষ্টিমেয় কয়েকটি দেশ এই কাঁচামাল উৎপাদন করে। তাই আমাদের এখনই দেশে উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।” তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দেশীয় উৎপাদন শুরু হলে বাংলাদেশ শুধু নিজেদের চাহিদা মেটাতেই সক্ষম হবে না, বরং কাঁচামাল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করতে পারবে।

বৈঠকে বিএআইএমএর সভাপতি এস এম সাইফুর রহমান বলেন, “ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো প্রণোদনা ও সহজ নিয়মের মাধ্যমে কাঁচামাল উৎপাদনে এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশকেও একই পথে হাঁটতে হবে।” তিনি জানান, বিএআইএমএ স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের কাছে ৯ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—কাঁচামাল উৎপাদন ও গবেষণায় প্রণোদনা, গ্যাস ও বিদ্যুতে ভর্তুকি, উৎপাদন সক্ষমতা থাকা প্রতিষ্ঠানের জন্য আমদানি নিষেধ, নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজীকরণ, ট্যাক্স-ভ্যাট মওকুফ এবং ঔষধ প্রশাসনের কমিটিতে বিএআইএমএর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।

বৈঠকে গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেডের এম জামাল উদ্দিন, সোডিক্যাল মেডিকেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজাম উদ্দিন আহমেদ, নিপ কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী, ওয়ার্ল্ড এপিআই কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির প্লান্ট ডিরেক্টর জাকির হোসেন এবং ডায়াবেটিকস সাইন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই এই উদ্যোগকে বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচনা করছেন।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের ওষুধশিল্পে আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং দেশীয় উৎপাদন বাড়বে। ফলে ওষুধের দাম সাশ্রয়ী হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ তৈরি হবে। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি

আপনার জন্য নির্বাচিত