বৃহস্পতিবার, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৫| বিকাল ৩:৪২

বাংলাদেশের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি: পল ক্রুগম্যান

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৯, ২০২৫ ৭:৪৮ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি: পল ক্রুগম্যান

বাংলাদেশের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি: পল ক্রুগম্যান

বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পোশাকের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে ভুল বলে মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান। তিনি বলছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন ক্রেতাদের জীবনযাত্রার খরচ বাড়িয়ে তুলবে, আর জাতীয় নিরাপত্তার জন্য কোনো লাভ দেবে না।

দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্রুগম্যান এই শুল্ককে বিশ্ব বাণিজ্যের ইতিহাসে বড় ধাক্কা বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পোশাকের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ একেবারেই ঠিক হয়নি। এটা আমেরিকানদের জন্য জীবনযাত্রা কঠিন করবে, আর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কিছুই যোগ করবে না।” তার কথায় ফুটে ওঠে গভীর উদ্বেগ।

ক্রুগম্যান ব্যাখ্যা করেন, জাতীয় নিরাপত্তার নামে দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর যুক্তি দেওয়া হলেও বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশগুলোর কথা ভাবা উচিত। তিনি বলেন, “কাছাকাছি দেশ থেকে পণ্য আনলে সরবরাহ সহজ ও নিরাপদ থাকে। তাই ভিয়েতনাম আর বাংলাদেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা উচিত নয়। কানাডা আর মেক্সিকো তো শুল্কমুক্তই আছে।”

তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “পিটার নাভারো, ট্রাম্পের বাণিজ্য জার, চীনবিরোধী বই লেখার জন্য নিয়োগ পেয়েছিলেন। তাকে জ্যারেড কুশনার আমাজনে খুঁজে বের করেছিলেন।” তিনি মজা করে বলেন, “তারা এমন লোক চেয়েছিল, যে শুধু ট্রাম্প যা শুনতে চান, তাই বলবে।”

ক্রুগম্যান বব লাইথিজারের কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “লাইথিজার ওয়াশিংটনের পরিচিত সংরক্ষণবাদী। তিনি বাণিজ্য নীতি জানেন। অনেকে ভেবেছিল, তিনি বড় ভূমিকা পাবেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনে তিনি ঠাঁই পাননি। কারণ তিনি স্বাধীনভাবে চিন্তা করেন। তিনি থাকলে হয়তো বলতেন, ‘বাংলাদেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা যাবে না।’”

গত ২ এপ্রিল ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। এর আগে এই হার ছিল ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৮.৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, যার বেশিরভাগ তৈরি পোশাক। গত বছর পোশাক রপ্তানি ছিল ৭.৩৪ বিলিয়ন ডলার। এই শুল্ক বৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় আঘাত হতে পারে।

ক্রুগম্যান বলেন, “এই শুল্ক মার্কিন ক্রেতাদের ক্ষতি করবে। পোশাকের দাম বাড়বে, জীবনযাত্রা কষ্টকর হবে।” তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “বাংলাদেশ থেকে সস্তায় পোশাক আসে। এটা বন্ধ হলে আমেরিকানরা বেশি খরচ করবে।” তিনি নিরাপত্তার যুক্তিকে প্রশ্ন করে বলেন, “এতে কী লাভ হচ্ছে? কিছুই না।”

ক্রুগম্যানের মতে, এই নীতি বিশ্ব বাণিজ্যের ভারসাম্য নষ্ট করছে। তিনি বলেন, “ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিকভাবে অযৌক্তিক।”

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি