বাল্টিক সাগরের রহস্যময় ‘UFO’—ভিনগ্রহের যান নাকি প্রাকৃতিক গঠন?
২০১১ সালে সুইডিশ গবেষক দল ‘ওশান এক্স’ বাল্টিক সাগরের গভীরে একটি অদ্ভুত গঠন খুঁজে পান, যা দেখতে অবিকল উড়ন্ত সসারের (UFO) মতো। এই আবিষ্কার বিশ্বজুড়ে গবেষকদের কৌতূহলী করে তোলে এবং অনেকেই একে ভিনগ্রহের প্রাণীদের (এলিয়েন) যান বলে দাবি করেন। তবে সত্যটি কি আসলেই তা? নাকি এটি শুধুই প্রাকৃতিকভাবে গঠিত কোনো ভূতাত্ত্বিক গঠন?
বাল্টিক সাগরের তলদেশে প্রায় ৩০০ ফুট গভীরে অবস্থিত এই বস্তুটির ব্যাস প্রায় ৬০ মিটার। এটিকে দেখে মনে হয়, যেন এটি ধাতব কোনো বিশাল চাকতি, যার পেছনে লম্বা একধরনের ট্রেইল রয়েছে, যা দেখে মনে হতে পারে এটি কোনো যান অবতরণের চিহ্ন। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, গবেষকদের মতে, বস্তুটির আশেপাশে বৈদ্যুতিক ডিভাইস কাজ করতে চায় না—যেন এটি কোনো শক্তিশালী চৌম্বকীয় শক্তির প্রভাব সৃষ্টি করছে।
এই রহস্যময় গঠনের সন্ধান পাওয়ার পর থেকে বিভিন্ন গবেষক এবং বিজ্ঞানীরা একাধিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কেউ কেউ মনে করেন, এটি আসলে বরফ যুগের শেষ দিকে গঠিত কোনো প্রাকৃতিক শিলা বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে সৃষ্ট গঠন। আবার অন্য একটি তত্ত্ব অনুযায়ী, এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের কোনো ডুবে যাওয়া যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষ হতে পারে। তবে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর এবং জনপ্রিয় তত্ত্ব হলো এটি আসলে বহির্জাগতিক কোনো প্রাণীর অবতরণ করা যান।
এখন পর্যন্ত এই বস্তুটির প্রকৃতি সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। কারণ গবেষণা দলগুলোর জন্য এত গভীরে গিয়ে গবেষণা চালানো ব্যয়বহুল এবং প্রযুক্তিগতভাবে চ্যালেঞ্জিং। তবুও এই রহস্যময় বস্তু নিয়ে কল্পনা ও গবেষণা চলছেই। কেউ কেউ একে ‘বাল্টিক সি অ্যানোমালি’ বলে ডাকেন, আবার অনেকে এটিকে প্রাচীন কোনো সভ্যতার অবশিষ্টাংশ বলেও মনে করেন।
এই রহস্যের আসল সত্য জানতে হলে আরো উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে গবেষণা চালাতে হবে। হয়তো একদিন বিজ্ঞানীরা এই অজানা গঠনের প্রকৃতি উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হবেন, কিন্তু তার আগে পর্যন্ত এটি UFO রহস্যপ্রেমীদের কাছে এক গভীর অনিশ্চয়তার বিষয় হয়েই থাকবে।