দ.কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউনকে গ্রেপ্তার অভিযানের প্রস্তুতি, বিক্ষোভে উত্তাল দেশ
দক্ষিণ কোরিয়ায় রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে গ্রেপ্তার করার উদ্দেশ্যে দুর্নীতি তদন্ত দপ্তর ও পুলিশ তার বাসভবনে অভিযান চালিয়েছে। ইউন ইতোমধ্যে অভিশংসিত হয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে সামরিক আইন (মার্শাল ল’) ঘোষণার অভিযোগ আনা হয়েছে।
শুক্রবার (০৩ জানুয়ারি) সকালে সিউলে ইউন সুক-ইওলের বাসভবনে পুলিশ ও দুর্নীতি তদন্ত কর্মকর্তারা প্রবেশ করেন। ২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর, ইউন সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সামরিক আইন ঘোষণা করেছিলেন, যা দেশটিকে তীব্র রাজনৈতিক সংকটে ফেলে। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা তাকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দুর্নীতি তদন্ত দপ্তর একটি বিবৃতিতে জানায়, প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার কাজ শুরু হয়েছে। আদালত ইতোমধ্যে এই পরোয়ানা জারি করেছে, কিন্তু ইউন এবং তার আইনি দল এই পরোয়ানাকে অবৈধ এবং অকার্যকর বলে উল্লেখ করেছে।
ইউন সুক-ইওল, যিনি রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার আগে দেশের শীর্ষ প্রসিকিউটর ছিলেন, তার নিরাপত্তা দল এর আগেও বেশ কয়েকটি অনুসন্ধান পরোয়ানা কার্যকর করতে বাধা দিয়েছে। তার সমর্থকরা তার বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে তদন্ত বাতিল এবং অভিশংসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
ইউনের সমর্থনে হাজারো মানুষ ঠান্ডা আবহাওয়া উপেক্ষা করে বিক্ষোভ চালাচ্ছে। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ২,৭০০ পুলিশ এবং ১৩৫টি পুলিশ বাস মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউন ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর থেকে তার পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত রয়েছেন। সাংবিধানিক আদালত তার অভিশংসন বহাল থাকবে কি না, তা নিয়ে ছয় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি একটি ঐতিহাসিক মোড়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের ভাগ্য এখন আদালতের রায় এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নির্ভর করছে। এই সংকট সমাধানের জন্য শান্তি এবং ন্যায়বিচার বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।