থাইল্যান্ড যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। তিনি সেখানে বিমসটেকের ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন। এই সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ নেতারা একত্রিত হবেন, যেখানে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে। এই সফরে ড. ইউনূস বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন এবং দেশের অবস্থান তুলে ধরবেন।
এই গুরুত্বপূর্ণ সফরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে থাকবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন। এই দুই কর্মকর্তা ড. ইউনূসের সঙ্গে সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক আলোচনায় সহায়তা করবেন। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার মঙ্গলবার ইউএনবি-কে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এই সফরে বাংলাদেশের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা থাকবে।
বিমসটেক, যার পূর্ণরূপ ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন’, এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এই সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল, ভুটান এবং মিয়ানমারের নেতারা অংশ নেবেন। ড. ইউনূসের এই সফরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্মেলনের আগে ড. ইউনূস একটি বিশেষ ফোরামে বক্তৃতা দেবেন। এই ফোরামের শিরোনাম ‘বিমসটেক তরুণ প্রজন্মের ফোরাম: ভবিষ্যৎ কোথায় মিলিত হয়’। এখানে তিনি তরুণদের ভূমিকা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টেকসই উন্নয়নের ওপর জোর দেবেন। বিশ্বব্যাপী শান্তি ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য কাজ করা এই নোবেলজয়ী ব্যক্তিত্বের বক্তব্য সবার জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ড. ইউনূসের এই সফর বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে তিনি দেশের অভ্যন্তরীণ সংস্কারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছেন। থাইল্যান্ডে তিনি অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও করতে পারেন, যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে।
এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে চায়। বিমসটেকের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য, যোগাযোগ, এবং জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন হতে পারে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ এই সম্মেলনে কীভাবে নিজেকে উপস্থাপন করে, তা নিয়ে দেশে-বিদেশে আগ্রহ রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, “এই সফরে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি এবং আঞ্চলিক শান্তির জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরবেন।” তিনি আরও বলেন, সম্মেলন শেষে ড. ইউনূস শিগগিরই দেশে ফিরবেন।