গোপনে ঢাকায় এসে টিউলিপের তথ্য নিয়ে গেল ব্রিটিশ দল
ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। সম্প্রতি এক গোপন বৈঠকে বাংলাদেশি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নেয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এনসিএ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে যে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে নতুন প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব প্রমাণের ভিত্তিতে তার ব্যাংক হিসাব, ই-মেইল রেকর্ড এবং অন্যান্য আর্থিক লেনদেনের তথ্য খতিয়ে দেখা হতে পারে। এমনকি তদন্তের প্রয়োজনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবার ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাৎ করেছেন। এ প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ঋণ এসেছে রাশিয়া থেকে। বিষয়টি আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে প্রকল্প সংক্রান্ত এক চুক্তির সময়, যখন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টিউলিপের ছবি প্রকাশিত হয়।
ব্রিটিশ তদন্ত সংস্থা এনসিএ জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায়, যাতে আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। যুক্তরাজ্যের ব্রাইবারি অ্যাক্ট ২০১০ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি বিদেশে ঘুষ গ্রহণ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্রিটেনে মামলা হতে পারে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
এমন অভিযোগ ওঠার পর গত মাসে টিউলিপ সিদ্দিক লেবার পার্টির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই এবং এটি একটি ষড়যন্ত্রের অংশ। এদিকে লেবার পার্টিও জানিয়েছে যে এখন পর্যন্ত টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিএ এবং ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে রাজনৈতিক মহলে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ ঘটনা বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছে।