শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:০৯

সাড়ে ৬ হাজারের বেশি ভারতীয়কে ভিসা দিচ্ছে পাকিস্তান

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ৯, ২০২৫ ৭:২৯ অপরাহ্ণ
সাড়ে ৬ হাজারের বেশি ভারতীয়কে ভিসা দিচ্ছে পাকিস্তান

সাড়ে ৬ হাজারের বেশি ভারতীয়কে ভিসা দিচ্ছে পাকিস্তান

শিখ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র উৎসব ‘বৈশাখী’ উপলক্ষে পাকিস্তান বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি এপ্রিলে ৬ হাজার ৫০০-এর বেশি ভারতীয়কে ভিসা দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে এই খবর জানিয়েছে। এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করছে।

শিখ ধর্মের জন্ম ১৫ শতকে অবিভক্ত পাঞ্জাবে। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির পর পাঞ্জাব দুই ভাগে ভাগ হয়। শিখদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান পাকিস্তানে পড়েছে। এই উৎসব শিখ সম্প্রদায়ের জন্য গভীর তাৎপর্য বহন করে। তাই বৈশাখীতে ভারতীয় শিখদের পাকিস্তানে আসার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

বৈশাখী উৎসব চলবে ১০ থেকে ১৯ এপ্রিল। পাকিস্তানি হাই কমিশন জানায়, ভারতীয়রা পাঞ্জাবের গুরুদুয়ারা পাঞ্জা সাহিব, গুরুদুয়ারা নানকানা সাহিব আর গুরুদুয়ারা কর্তারপুর সাহিবে যেতে পারবেন। এই স্থানগুলো শিখদের কাছে পবিত্র। একজন শিখ তীর্থযাত্রী বলেন, “এই সুযোগ আমাদের জন্য স্বপ্নপূরণের মতো।”

নয়াদিল্লির পাকিস্তান হাই কমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সাদ আহমেদ ওয়ারাইশ জিও নিউজকে বলেন, “এটা ভারতীয়দের প্রতি আমাদের শুভেচ্ছার প্রতীক।” তিনি যোগ করেন, “পাকিস্তান সবসময় ভারতের মানুষ, তাদের সংস্কৃতি আর ধর্মের প্রতি সম্মান দেখাতে চায়। আমরা সম্প্রীতির পথে এগোতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” তার কথায় ফুটে ওঠে দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যের আশা।

ওয়ারাইশ আরও বলেন, “এই ভিসা প্রদানের ধারা ভবিষ্যতেও চলবে। আমরা চাই, দুই দেশের মানুষ কাছাকাছি আসুক।” এই উদ্যোগ ভারতীয় শিখদের মনে আনন্দের জোয়ার এনেছে। একজন ভারতীয় বলেন, “এটা আমাদের ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সম্মান। আমরা কৃতজ্ঞ।”

দুই দেশের মধ্যে ১৯৭৪ সালে ‘প্রটোকল অন ভিসিট টু রিলিজিয়াস শ্রিনস’ নামে একটি চুক্তি হয়। এরপর থেকে ধর্মীয় উৎসবে দুই দেশের তীর্থযাত্রীরা একে অপরের দেশে যান। এই চুক্তি দুই দেশের মানুষের মধ্যে একটি সেতু তৈরি করেছে। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এর সুবিধা পান।

বৈশাখী উৎসবের জন্য ভারতীয় শিখরা উৎসাহ নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। একজন পর্যটক বলেন, “নানকানা সাহিবে যাওয়ার স্বপ্ন অনেক দিনের। এবার তা পূরণ হবে।” পাকিস্তানও তাদের জন্য প্রস্তুত। স্থানীয়রা বলছেন, “আমরা অতিথিদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত।”

এই ভিসা প্রদান দুই দেশের সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। রাজনৈতিক উত্তেজনা থাকলেও ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বন্ধন মানুষকে কাছে আনছে। ওয়ারাইশ বলেন, “এটা শুধু ভিসা নয়, এটা মানবতার জয়।”

পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ ভারতীয় শিখ সম্প্রদায়ের কাছে আনন্দের। একজন শিখ নেতা বলেন, “এটা আমাদের ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান। আমরা আশা করি, এই সম্পর্ক আরও গভীর হবে।” গুরুদুয়ারাগুলোতে ভ্রমণের এই সুযোগ তাদের জন্য অমূল্য।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি