‘সাম্যের বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমরা এক সঙ্গে কাজ করব’ – তাসনীম জারা
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেছেন, “যে সাম্যের বাংলাদেশের জন্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল, সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করব।” এই প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন রোববার, ৩০ মার্চ, সকাল ১১টায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে একটি ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে। এই অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের হাতে ঈদ উপহার তুলে দেওয়া হয়।
ডা. তাসনিম জারা তার বক্তব্যে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া মানুষের সাহসের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আপনারা অসাধারণ সাহস দেখিয়েছেন। গুলির মুখে একবার নয়, বারবার দাঁড়িয়েছেন। মৃত্যুকে সামনে রেখেও আপনারা পিছপা হননি। এই সাহসের কথা বলে বোঝানো যায় না। আপনাদের এই ত্যাগের কারণেই আজ আমরা একটি নতুন বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে আছি।” তার কণ্ঠে গর্ব আর কৃতজ্ঞতার সুর ছিল স্পষ্ট।
তিনি আরও বলেন, “আপনারা যে স্বপ্ন নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন, যে সাহস নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন, আমরা আশা করি সেই স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে পারব। আমরা চাই, এই দেশ জনগণের হবে। এখানে সবার অধিকার সমান থাকবে। কারও পদ বা সম্পত্তির ওপর ভিত্তি করে অধিকার নির্ধারিত হবে না। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে না, কাউকে অপমান করা হবে না।” তার এই কথাগুলো শুনে উপস্থিত অনেকের চোখে আশার ঝিলিক দেখা গেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে আমার আগেও দেখা হয়েছে। আজ আবার দেখা হওয়ায় ভালো লাগছে। ঈদের আগে এমন সুন্দর একটি আয়োজনের জন্য জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ।” তার এই সৌজন্য শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং একটি আন্তরিক সংযোগের প্রকাশ।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মিজ সুলতানা আক্তার সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর মাহমুদ সুজন, মুখপাত্র রাজিব মোল্লা, সদস্য মিরাজুল মাজিদ তূর্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রমজান আলী, এবং ঢাকা বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী জাকির হোসেন। সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. ইমরুল হাসান। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক মাজহারুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার মোল্লা ইফতেখার আহমেদ, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর নাহিদ আহমেদ, এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজবাড়ী শাখার নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত তিন শহীদের পরিবার এবং আহত ৭৭ জনের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়। এই উপহারের মধ্যে ছিল চাল, চিনি, সেমাই, তেল, আর গুঁড়ো দুধ। এই ছোট্ট উদ্যোগ শহীদ ও আহতদের পরিবারের প্রতি সম্মান ও সংহতি প্রকাশের একটি প্রতীক।