চাঁদপুরের নামে ভুয়া অনলাইন পেইজ খুলে ইলিশ বিক্রির নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৮
‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর অনলাইন শপ’, ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’, ‘চাঁদপুর ইলিশ ঘাট’—এই ধরনের নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে পেইজ খুলে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে অনলাইনে ইলিশ বিক্রির নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি প্রতারক চক্র।
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম খুলনা, নড়াইল ও যশোরে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের আট সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৫টি মোবাইল ফোন ও ৭০টি ভুয়া রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
বুধবার ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) ও মুখপাত্রের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—আনাছ শেখ (২১), কামাল শেখ (২১), ইয়ানুর মোল্লা (২১), জোবায়ের হোসেন (২৩), রুবেল শেখ (২৯), সাগর হোসেন (২৩), মো. আলীনূর ইসলাম (১৮) ও শরিফুল ইসলাম (২১)।
জানা গেছে, গত বছরের ২০ নভেম্বর মাসুম বিল্লাহ নামের একজন ভুক্তভোগী ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’ নামক একটি ফেসবুক পেইজে সুলভ মূল্যে ইলিশের বিজ্ঞাপন দেখে ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম পরিশোধ করেন। কিন্তু পরে তিনি কোনো ইলিশ পাননি। এ ঘটনায় খিলগাঁও থানায় একটি প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়, যা পরে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ডিবি প্রতারক চক্রটিকে শনাক্ত করে।
ডিবি-সাইবার বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি হারুনুর রশিদ জানান, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন শপের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুক পেইজ খুলে চাঁদপুরের তাজা ইলিশ সুলভ মূল্যে সরবরাহের প্রলোভন দেখাত। তারা অগ্রিম টাকা নিয়ে ইলিশ সরবরাহ করতো না এবং পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিত।
তিনি আরও জানান, চক্রটির নেতৃত্বে থাকা আনাছ শেখ ও শরিফুল ইসলাম ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে কিছু অসাধু মোবাইল কোম্পানি ও মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের কর্মীদের সহযোগিতায় অবৈধ সিম ও বিকাশ-নগদ অ্যাকাউন্ট খুলে প্রতারণা করত। গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনলাইনে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা চালানোর বিষয়টি স্বীকার করেছে।
ডিএমপি জানায়, এ চক্রের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা বিভিন্ন থানায় অভিযোগ করেছেন। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং চক্রটির বাকি সদস্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরবাসীকে অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে অজানা পেইজ থেকে অগ্রিম টাকা পাঠানোর আগে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।