আমাদের দেশের লিডারশিপ হচ্ছে ভণ্ডামিপূর্ণ: হাসনাত আবদুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ দেশের নেতৃত্বের প্রতি কঠোর সমালোচনার সুরে বলেছেন, “আমাদের দেশের লিডারশিপ হচ্ছে ভণ্ডামিপূর্ণ।” তিনি বলেন, “যারা আমাদেরকে নীতি-নৈতিকতার কথা বলেন, নিয়ম মানতে বলেন, তারা নিজেরা সেই নিয়মের ধারে-কাছেও যান না। যারা সমাজের জন্য সেবা তৈরি করেন, তারা কিন্তু সেই সেবার ভোক্তা হন না।” শুক্রবার, ২৮ মার্চ, বিকালে দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত একটি পুনর্মিলনী ও ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন। দেবিদ্বার পাবলিকিয়ান অ্যাসোসিয়েশন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল।
হাসনাত আবদুল্লাহ তার বক্তব্যে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতির দিকে আঙুল তুলে বলেন, “আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছেন, যারা সুদখোরি করেন, ঘুষ নেন। কিছু মানুষ আছেন, যাদের পেশাই হয়ে দাঁড়িয়েছে সালিশ-দরবার করা। আবার কেউ কেউ থানার আশপাশে ঘোরাফেরা করেন। এমনও মানুষ আছেন, যারা কখনো স্কুলের কাছাকাছি যাননি, অথচ তাদের একমাত্র লক্ষ্য স্কুল কমিটির সভাপতি হওয়া।” তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “এদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আসল দোষটা আমাদের। আমরা সচেতনভাবে এদের প্রতিহত করার চেষ্টা করি না। আমাদের নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে।”
দেবিদ্বারের নেতৃত্ব নিয়ে তিনি আরও গভীরভাবে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “দেবিদ্বারের নেতৃত্বে এমন মানুষ এসে বসছেন, যারা কখনো এখানে থাকেননি। তারা এলাকার অলিগলি চেনেন না, বাজারে এসে কখনো কেনাকাটা করেননি, এমনকি এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনাও করেননি।” তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “দেবিদ্বারের সমস্যা কী, তা কি তারা জানেন? আমরা এখানকার ধুলোমাটি থেকে গড়ে ওঠা সত্যিকারের নেতৃত্ব কখনো পাইনি। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক।”
হাসনাত আবদুল্লাহর এই বক্তব্যে উপস্থিত অনেকেই সম্মতি জানিয়েছেন। তিনি সমাজের এই গভীর সমস্যাগুলোর জন্য শুধু নেতাদের দায়ী করেননি, বরং সাধারণ মানুষের নীরবতাকেও দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা যদি এই ভণ্ডামি আর অসঙ্গতির বিরুদ্ধে কথা না বলি, তাহলে পরিবর্তন আশা করা বৃথা। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পাবলিকিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম আরাফাত এবং সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম। তারাও এলাকার উন্নয়ন ও স্থানীয় নেতৃত্বের গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন। জিল্লুর রহমান বলেন, “আমাদের এলাকার সমস্যা সমাধানে এমন নেতৃত্ব দরকার, যারা এখানকার মাটির গন্ধ বোঝেন।” শরীফুল ইসলাম আরাফাত যোগ করেন, “স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো উন্নয়ন টেকসই হবে না।”