‘জিয়া সাংস্কৃতিক জোট’ নামের সংগঠনটি ভুয়া – বিএনপি
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সম্প্রতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ‘জিয়া সাংস্কৃতিক জোট’ নামে পরিচিত একটি সংগঠন সম্পূর্ণ ভুয়া এবং এটির সঙ্গে দলটির কোনো সম্পর্ক নেই। ২৪ মার্চ, ২০২৫ তারিখে বিএনপির পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। দলটির দাবি, এই সংগঠনটি বিএনপির নাম ও প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাবমূর্তি ব্যবহার করে অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করার একটি ষড়যন্ত্র।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে বলেন, “‘জিয়া সাংস্কৃতিক জোট’ নামে কোনো সংগঠন বিএনপির অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন হিসেবে নিবন্ধিত নয়। এটি একটি ভুয়া সংগঠন, যারা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।” তিনি আরও জানান, এই সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে দলের নেতাকর্মীদের সত ১৮০টি দেশের মধ্যে তুরস্কে প্রেস স্বাধীনতার সূচকে ১৬৫তম স্থানে রয়েছে। এই ঘটনার পর সংগঠনটি বিবৃতিতে বলেছে, “সাংবাদিকদের বাড়ি থেকে তুলে নেওয়া সরকারের ভীতি ও নিপীড়নের প্রমাণ।” সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং এর সঙ্গে জড়িত থাকলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সংগঠনটি নাকি বিএনপির সাংস্কৃতিক শাখা হিসেবে পরিচিতি দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করছিল। তবে, বিএনপির দাবি, তাদের অফিসিয়াল সাংস্কৃতিক সংগঠন হলো ‘জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস)’, এবং ‘জিয়া সাংস্কৃতিক জোট’ নামে কোনো সংগঠন তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। দলটির মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, এই ভুয়া সংগঠনটি সম্প্রতি কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছিল, যা বিএনপির ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “এই ধরনের ভুয়া সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নাম অপব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং জনগণকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, এটি সরকারের একটি ষড়যন্ত্র হতে পারে, যার মাধ্যমে বিএনপিকে হেয় করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে, ‘জিয়া সাংস্কৃতিক জোট’ নামের এই সংগঠনের কোনো অফিসিয়াল ঠিকানা বা নিবন্ধন পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তদন্তে জানা গেছে, এটি কয়েকজন ব্যক্তি মিলে গোপনে পরিচালনা করছিল, যারা নিজেদের বিএনপির সমর্থক হিসেবে দাবি করে আসছিল। তবে, তাদের দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ এটিকে দলের অভ্যন্তরীণ সমস্যা হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ মনে করছেন এটি বিরোধীদের চক্রান্ত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলেও, দলের নেতৃত্ব স্পষ্টভাবে এটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও লন্ডন থেকে এক বার্তায় বলেছেন, “আমাদের দলের নামে ভুয়া কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।”
