বৃহস্পতিবার, ৫ই জুন, ২০২৫| বিকাল ৪:১০

কানাডায় আগাম নির্বাচনের ঘোষণা

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৪, ২০২৫ ৩:২০ অপরাহ্ণ
কানাডায় আগাম নির্বাচনের ঘোষণা

কানাডায় আগাম নির্বাচনের ঘোষণা

কানাডায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা এসেছে। নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি রোববার (২৩ মার্চ, ২০২৫) আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন, যা আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। গভর্নর জেনারেল মেরি সাইমনের কাছে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কার্নি, এবং তিনি তা মেনে নিয়েছেন। এই নির্বাচন কানাডার ৪৫তম সংসদের সদস্য নির্বাচন করবে। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক এবং সীমান্ত সংকটের প্রেক্ষাপটে এই আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কানাডা ইলেকশনস অ্যাক্ট অনুযায়ী, নির্বাচন ২০ অক্টোবর, ২০২৫-এর মধ্যে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কার্নি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মার্ক কার্নি, যিনি জানুয়ারিতে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর লিবারেল পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে “৫১তম রাজ্য” করার হুমকি দেশটির অর্থনীতি ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। কার্নি বলেন, “এই সংকটময় সময়ে আমাদের একটি শক্তিশালী জনাদেশ প্রয়োজন। জনগণের কাছে গিয়ে তাদের মতামত জানা জরুরি।” তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার আগে কানাডীয়দের সমর্থন নিশ্চিত করতে চান। এই নির্বাচনে ২০২১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে নতুন ৩৪৩টি আসনের মানচিত্র ব্যবহৃত হবে।

লিবারেল পার্টি, যারা ২০১৫ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে, বর্তমানে জনমত জরিপে কনজারভেটিভদের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছে। ট্রুডোর সময়ে আবাসন সংকট ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সমালোচনার পরও, ট্রাম্পের হুমকির মুখে লিবারেলরা জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে জনপ্রিয়তা ফিরে পেয়েছে। কার্নি, যিনি একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় ব্যাংকার, জনমত জরিপে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তার রেটিং পেয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, তিনি এই গতির সুযোগ নিয়ে নির্বাচন ডেকেছেন, যাতে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় শক্ত অবস্থান নিতে পারেন।

কনজারভেটিভ নেতা পিয়ের পোলিয়েভ্রে এই ঘোষণার সমালোচনা করে বলেছেন, “লিবারেলরা গত দশকের ব্যর্থতা ঢাকতে নির্বাচন ডেকেছে। আমি কানাডার জন্য লড়ব।” তবে, তার আক্রমণাত্মক ভাষণ ও ট্রাম্পের সঙ্গে তুলনা তার জনপ্রিয়তায় কিছুটা ভাটা ফেলেছে। এনডিপি নেতা জগমীত সিং বলেছেন, তিনি ভোটে ভোটে সিদ্ধান্ত নেবেন, কিন্তু তিনি পোলিয়েভ্রের সঙ্গে একমত নন। ব্লক কুইবেকোয়া ও গ্রিন পার্টিও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

নির্বাচনের প্রচারণা ৩৭ থেকে ৫১ দিনের মধ্যে হবে। কানাডার “ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট” ব্যবস্থায় প্রতিটি রাইডিংয়ে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া প্রার্থী জয়ী হবেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেলে দল সরকার গঠন করবে, অন্যথায় সংখ্যালঘু সরকার হবে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতি কানাডার অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা তৈরি করেছে, এবং এই নির্বাচনে প্রধান প্রশ্ন হবে—কে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক সামলাতে সবচেয়ে উপযুক্ত?

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি