শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| ভোর ৫:৫৯

৫ লাখের বেশি অভিবাসীর বৈধতা বাতিল করলেন ট্রাম্প

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৩, ২০২৫ ৪:৪১ অপরাহ্ণ
৫ লাখের বেশি অভিবাসীর বৈধতা বাতিল করলেন ট্রাম্প

৫ লাখের বেশি অভিবাসীর বৈধতা বাতিল করলেন ট্রাম্প

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর সিদ্ধান্তে, ৫ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি অভিবাসীর অস্থায়ী বৈধতা বাতিল হয়ে গেছে। শনিবার (২২ মার্চ) এই ঘোষণা আসার পর থেকে কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া এবং ভেনেজুয়েলা থেকে আগত এই অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে তাদের ২৪ এপ্রিলের মধ্যে দেশ ত্যাগ করতে হবে, অন্যথায় দ্রুত ডিপোর্টেশনের মুখোমুখি হতে হবে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে অনেকে “অভিবাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” বলে আখ্যায়িত করছেন।

এই অভিবাসীরা বাইডেন প্রশাসনের সময়ে চালু করা ‘সিএইচএনভি প্যারোল প্রোগ্রাম’-এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে তাদের দুই বছরের জন্য থাকার এবং কাজের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প, যিনি নির্বাচনী প্রচারে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, প্রথম দিনেই এই প্রোগ্রাম বন্ধের নির্দেশ দেন। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস) জানিয়েছে, এই প্রোগ্রাম “সীমান্ত নিরাপত্তায় উন্নতি আনেনি” এবং “অভ্যন্তরীণ অভিবাসন আইন প্রয়োগে জটিলতা সৃষ্টি করেছে।” ফলে, এই অভিবাসীদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।

ইতিমধ্যে, এই সিদ্ধান্তের প্রভাবে অভিবাসী সম্প্রদায়ে হতাশা ও ভয় ছড়িয়ে পড়েছে। একজন ভেনেজুয়েলান অভিবাসী বলেন, “আমি আমার পরিবারকে নিয়ে এখানে এসেছি একটি ভালো জীবনের আশায়। এখন আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙে গেছে।” অনেকে আশঙ্কা করছেন, দেশে ফিরলে তাদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। হাইতি থেকে আগত একজন বলেন, “আমার দেশে গ্যাং সহিংসতা আর দারিদ্র্য। ফিরে গেলে আমি বাঁচব না।” এই পরিস্থিতিতে অনেকে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘের এক মুখপাত্র বলেছেন, “এটি মানবিক সংকটকে আরও গভীর করবে।” যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নাগরিক ও অভিবাসী গোষ্ঠী ইতিমধ্যে ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেছে, এই প্রোগ্রাম পুনর্বহালের দাবিতে। তবে ট্রাম্প প্রশাসন পিছু হটছে না। তাদের দাবি, এই পদক্ষেপ অবৈধ অভিবাসন রোধ এবং জাতীয় নিরাপত্তা জোরদার করবে।

ট্রাম্পের এই আদেশে অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়তে পারে। এই অভিবাসীরা বিভিন্ন খাতে কাজ করছিলেন, যা এখন শ্রম সংকটের মুখে পড়তে পারে। একজন ব্যবসায়ী বলেন, “আমার রেস্তোরাঁয় তিনজন কাজ করত। তারা চলে গেলে আমি কী করব?” এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। ট্রাম্প কি আরও কঠোর পদক্ষেপের দিকে এগোবেন? ৫ লাখের বেশি মানুষের জীবন এখন ঝুলছে অনিশ্চয়তার দোলনায়।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি