গাজায় মঙ্গলবার থেকে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক শিশু নিহত: ইউনিসেফ
গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে ২০০ এর বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। ইউনিসেফের মুখপাত্র রোজালিয়া পাওলিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েল গাজায় পুনরায় হামলা শুরু করার পর থেকে শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৫৯০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতদের সংখ্যা আরও কয়েকশ ছাড়িয়েছে এবং নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।
এদিকে, ইসরায়েলের স্থল বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ শহর এবং উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়াসহ কেন্দ্রীয় এলাকায় অগ্রসর হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এই অগ্রযাত্রার ফলে গাজার পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। শহরের বিদ্যমান মানবিক সংকট তীব্রতর হয়েছে এবং সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গত অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪৯,৬১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১১২,৯৫০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও বেশি, যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও বহু মানুষ আটকা পড়ে মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের সূত্রপাত হয়েছিল ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর। ওই হামলায় ১,১৩৯ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি জিম্মি করা হয়। এর জবাবে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, যা এখনো চলমান।
এদিকে, গাজায় শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলছে, গাজায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। শিশুদের সুরক্ষা ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় এই ধরনের ব্যাপক প্রাণহানি এবং মানবিক বিপর্যয় দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে শিশুদের উপর মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির প্রভাব বছরের পর বছর ধরে বহন করতে হবে। এমতাবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করাই একান্ত জরুরি।