রমজানের প্রথম ১০ দিনে রেকর্ড আড়াই কোটি মুসল্লি দেখেছে কাবা
রমজান মাস মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়, যখন সারা বিশ্বের মুসলমানরা সিয়াম সাধনা, ইবাদত-বন্দেগি এবং আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন। এই মাসে পবিত্র কাবা শরিফে মুসল্লিদের সমাগম স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। তবে চলতি রমজানের প্রথম ১০ দিনে কাবা শরিফে যে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির আগমন ঘটেছে, তা পূর্ববর্তী সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
সৌদি আরবের ‘দ্য জেনারেল প্রেসিডেন্সি ফর দ্য অ্যাফেয়ার্স অফ দ্য গ্র্যান্ড মস্ক অ্যান্ড দ্য প্রফেটস মস্ক’ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রমজানের প্রথম ১০ দিনে পবিত্র কাবা শরিফে প্রায় আড়াই কোটি মুসল্লি ইবাদত-বন্দেগিতে অংশ নিয়েছেন। এটি একটি নতুন মাইলফলক, যা পূর্বে কখনো দেখা যায়নি। এছাড়াও, এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি ৫০ লাখ মুসল্লি ওমরাহ পালন করেছেন, যা আরেকটি উল্লেখযোগ্য রেকর্ড।
এই বিপুল সংখ্যক মুসল্লির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কাবা চত্বরে মুসল্লিদের সুবিধার্থে ৮,০০০-এর বেশি স্পিকার স্থাপন করা হয়েছে, যাতে আযান, খুতবা ও নামাজের সঠিক ধ্বনি পৌঁছায়। চত্বর আলোকিত রাখতে ব্যবহৃত হয়েছে ১,২০,০০০-এর বেশি বৈদ্যুতিক বাতি। এছাড়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে ৪,০০০ কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন, যারা ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে কাজ করছেন। এই কর্মীদের তদারকিতে রয়েছেন ৩৫০ জন ব্যবস্থাপক।
রমজানের প্রথম ১০ দিনকে ইসলামে ‘রহমতের দশক’ বলা হয়। এই সময়ে আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তুমি জগদ্বাসীর প্রতি দয়া করো, তবে আল্লাহ তাআলা তোমার প্রতি দয়া করবেন।’
এই উপলব্ধি মুসল্লিদেরকে কাবা শরিফে এসে ইবাদতে মশগুল হতে উদ্বুদ্ধ করে।
এ বছর রমজানের প্রথম ১০ দিনে কাবা শরিফে মুসল্লিদের এই বিপুল সমাগম বিশ্বজুড়ে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সৌদি সরকারের সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা ও মুসল্লিদের আন্তরিকতা এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আশা করা যায়, আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং মুসলিম উম্মাহ আরও সুদৃঢ় ঐক্যের পথে অগ্রসর হবে।