ফেব্রুয়ারিতে দুই দিনের হরতালের ডাক দিল আওয়ামী লীগ
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পদত্যাগ এবং “অপশাসন ও নির্যাতনের” প্রতিবাদে আগামী ১৬ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবির সমর্থনে প্রচারপত্র বিলি করা হবে। এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি দলটি আবারও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করবে। তবে সবচেয়ে কঠোর কর্মসূচি হিসেবে ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ দলটির অন্যান্য নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলা ও অন্যান্য মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। একই সঙ্গে তারা দাবি করেছে, “প্রহসনমূলক বিচার” অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
আলোচিত এই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শেখ হাসিনাকে “প্রধানমন্ত্রী” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় নেই, তবে তারা স্পষ্টভাবেই শেখ হাসিনাকে দেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে এই কর্মসূচির জবাব দেবে, তা নিয়েও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এর আগে বিরোধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ বড় ধরনের আন্দোলনের ডাক দিলেও, সরকারপক্ষ কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। এবারও একই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা দলীয় সমর্থকদের হরতাল কর্মসূচি সফল করতে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমেই তারা “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার” করতে চান। অন্যদিকে, সরকারপন্থী গোষ্ঠীগুলো দাবি করছে, আওয়ামী লীগ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতেই এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।
আগামী কয়েকদিন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন সময়ই বলে দেবে। তবে নির্ধারিত হরতালের দিনগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সংঘর্ষের আশঙ্কা করা হচ্ছে।