সচিবালয়ের নিরাপত্তায় বড় বিপর্যয়, সিসি ক্যামেরার ৭৯% অচল!
বাংলাদেশের প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ হয়েছে। ৬২৪টি সিসি ক্যামেরার মধ্যে মাত্র ৩৫টি সচল, ৯৫টি অর্ধ-বিকল, এবং ৪৯৪টি পুরোপুরি অচল। শুধু সিসি ক্যামেরা নয়, সচিবালয়ের তিনটি ফটকে থাকা চারটি ব্যাগেজ স্ক্যানারও নষ্ট হয়ে গেছে, এর পাশাপাশি ছয়টি আর্চওয়ে থেকেও কোনটি কাজ করছে না। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, যা প্রশাসনিক দুর্বলতার বড় একটি দৃষ্টান্ত।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য ২০২৪ সালের শুরুতে ৭৪টি ক্যামেরা এবং আরও কিছু সরঞ্জাম কেনার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। তবে এই দরপত্রের মাধ্যমে চারটি প্রতিষ্ঠান অংশ নিলেও কোনো প্রতিষ্ঠানই শর্ত পূরণ করতে পারেনি, যার ফলে ১৯ মে দরপত্র বাতিল করা হয়। এর পর, নিরাপত্তা সরঞ্জামগুলোর হালনাগাদ এবং যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়, যা ১৫ ডিসেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাড়ে ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু এখনও সেই অর্থ ছাড় করা হয়নি।
গত ২৫ ডিসেম্বর সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে আগুন লেগে পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের দপ্তর পুড়ে যায়। এই ঘটনায় শুধু পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্রই নয়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র এবং কম্পিউটারও ধ্বংস হয়ে যায়। এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে সিসি ক্যামেরা এবং অন্যান্য নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি অকার্যকর হয়ে পড়েছে, সেখানে ভবনটিতে আগুন লেগে যাওয়ার পর কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল, সেটি নিয়ে সরকারের উচিত আরও সতর্ক থাকা।
এমন পরিস্থিতিতে সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্গঠনের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি হয়ে পড়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়কে দ্রুত প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিতে বলা হলেও এখন পর্যন্ত সেই বরাদ্দের কোন অগ্রগতি হয়নি। এই পরিস্থিতি প্রশাসনিক অবকাঠামোর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং যদি তড়িৎ পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, যা দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।