রাত জাগার অভ্যাস: নিঃশব্দে ক্ষতি করছে শরীর ও মনের
রাত জেগে থাকার ফলে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক ছন্দ বা বায়োলজিক্যাল ক্লক ব্যাহত হয়। এর ফলে ওজন বৃদ্ধি, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যাওয়াসহ একাধিক শারীরিক ও মানসিক সমস্যার ঝুঁকি তৈরি হয়। ঘুমের অভাব মনোযোগ কমিয়ে দেয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণে সমস্যা তৈরি করে এবং এমনকি অন্ত্রের স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে। প্রতিদিন রাতের ঘুম সাত থেকে নয় ঘণ্টা হওয়া উচিত। এছাড়া ঘুমানোর আগে স্ক্রিন এড়িয়ে চলা এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলাও সুস্থ থাকার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
অনেকের কাছে রাতে এক ঘণ্টা বেশি সিরিজ দেখা বা রিলস স্ক্রোল করা আনন্দদায়ক মনে হলেও, এই অভ্যাস ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যহানি ঘটায়। প্রথমে তেমন ক্ষতি চোখে না পড়লেও দীর্ঘমেয়াদে এটি নানা শারীরিক জটিলতার জন্ম দিতে পারে। নিচে রাত জাগার তিনটি গোপন ক্ষতির কথা তুলে ধরা হলো—
ওজন বৃদ্ধি:
ঘুম কম হলে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন যেমন লেপটিন ও ঘ্রেলিনের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হয়। এতে ক্ষুধা বেড়ে যায়, ফলে অনেকেই রাতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে খাওয়া শুরু করেন। বিশেষত উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। এর ফলে ওজন বৃদ্ধি পায় এবং স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
খিটখিটে মেজাজ:
ঘুম পর্যাপ্ত না হলে মন-মেজাজও ভালো থাকে না। ঘুম আমাদের মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। দেরিতে ঘুমানো মেজাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, মন খারাপ ও বিরক্তিভাব তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত রাত জাগেন, তাদের মধ্যে মেজাজ খিটখিটে হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
পেট ফাঁপা ও হজমের সমস্যা:
ঘুমের অভাব অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্যহীন করে তোলে, যা হজমে সমস্যা তৈরি করে। কর্টিসল ও মেলাটোনিনের মতো হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে হজম ও বিপাকের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এর ফলে পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিক ও ইনসুলিন সংবেদনশীলতার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা পরবর্তীতে ডায়াবেটিসসহ নানা বিপাকীয় রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে রাত জাগার অভ্যাস ত্যাগ করা এবং একটি নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুমের রুটিন মেনে চলা একান্ত জরুরি।