ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলো ইরান
ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক ভয়াবহ সশস্ত্র হামলার পর যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক চরম উত্তেজনার দিকে যাচ্ছে, ঠিক তখনই শান্তির বার্তা নিয়ে সামনে এল ইরান। দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার এই সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে তেহরান।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান এক বার্তায় জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বোঝাপড়ার পরিবেশ তৈরি করতে তারা প্রস্তুত। এক প্রতিবেদনে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাইন্ডিয়া টুড এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে জোর দিল ইরান
এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন,“ভারত ও পাকিস্তান আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম প্রতিবেশী। আমরা এমন এক বন্ধনের অংশীদার, যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সভ্যতার গভীর সম্পর্ক দিয়ে গড়ে উঠেছে। অন্যান্য প্রতিবেশীদের মতো তারাও আমাদের কূটনৈতিক অগ্রাধিকারে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে এই সংকটকালে দুই দেশের মধ্যে একটি গঠনমূলক আলোচনার মঞ্চ তৈরির চেষ্টা চলছে।
পহেলগামের হামলা: উত্তেজনার শুরু
গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাম এলাকায় এক ভয়াবহ বন্দুকধারীর হামলায় প্রাণ হা২৬ জন নিরীহ মানুষ। এই হামলার জন্য ভারত পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে দায়ী করে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায়। যার ফলে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক টানাপোড়েন আবারও তীব্র হয়ে ওঠে।
এই ঘটনার রেশ ধরে ভারত একতরফাসিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়—যা পাকিস্তানে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। দেশটির পক্ষ থেকে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত পর্যন্ত এসেছে, যদি পানি প্রবাহ বন্ধের চেষ্টা করা হয়।
ইরানের ভূমিকা: নতুন আশার আলো?
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ইরান যে শান্তির বার্তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে, তা অনেকের কাছে এক ধরনের কূটনৈতিক আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই ইরান দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা চায়, আর এই অঞ্চলের শান্তির জন্য তেহরানের এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
বিশেষ করে এমন এক সময়, যখন দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনা যেকোনো সময় ভয়াবহ সংঘাতে রূপ নিতে পারে, তখন এক বিশ্বমাঝি শক্তির পক্ষ থেকে মধ্যস্থতার আহ্বান অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ।
এখন দেখার বিষয়, ভারত ও পাকিস্তান ইরানের এই শান্তিপূর্ণ উদ্যোগকে কীভাবে গ্রহণ করে। উত্তেজনার আগুনে জ্বালানি না ঢেলে যদি সত্যিই আলোচনার পথ খোঁজা হয়, তবে এই অঞ্চলে এক বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার সম্পাকিস্তান-ভারত দ্বন্দ্বে যখন যুদ্ধের আশঙ্কা ঘনিয়ে আসছে, তখন শান্তির এক ডাক দিয়েছে ইরান। হয়তো সময় এসেছে দুই প্রতিবেশী দেশের জন্যই কূটনীতির পথে ফিরে আসাকারণ যুদ্ধ কখনোই শেষ কথা নয়—শান্তিই মানবতার প্রকৃত বিজয়।র।
ভাবনাই বেশি।