পেহেলগাম হামলার রেশ বলিউডে, দিলজিত-হানিয়া ভিডিও ঘিরে বিতর্কে উত্তাল নেটদুনিয়া
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই ঘটনার প্রভাব পড়েছে বলিউডেও। পাকিস্তানি শিল্পীদের বলিউডে নিষিদ্ধ করার দাবিতে যখন বলিউডের একাংশ সোচ্চার, ঠিক তখনই সামনে আসে বলিউড তারকা দিলজিত দোসাঞ্জ ও পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমিরের একটি ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও, যা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সোশাল মিডিয়ায়।
ভিডিওটি ‘সর্দার ৩’ সিনেমার শুটিং সেট থেকে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও বাস্তব জীবনে তাঁদের মধ্যে কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই, বরং এই ছবির চরিত্র অনুযায়ীই তাঁদের একসঙ্গে দেখা গেছে। আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল, এই সিনেমায় জুটি বাঁধতে চলেছেন দিলজিত ও হানিয়া, এবং ইতিমধ্যেই শুটিং শুরু হয়ে গেছে।
তবে এমন সময়ে যখন পুলওয়ামা এবং পেহেলগাম হামলার প্রেক্ষিতে বলিউডে পাক শিল্পীদের প্রবেশ কার্যত নিষিদ্ধ, তখন হানিয়া আমিরকে কাস্ট করা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও দিলজিত নিজের সোশাল মিডিয়ায় ছবির শুটিং সংক্রান্ত কিছু পোস্ট করেছেন, কিন্তু হানিয়ার নাম উল্লেখ করেননি। তবুও অনুরাগীদের চোখে পড়ে গেছে কিছু সূক্ষ্ম ইঙ্গিত— নীরু বাজওয়ার পাশে দেখা যাওয়া এক তরুণীকে হানিয়া বলে দাবি করেছেন অনেকে। এমনকি দিলজিতের টি-শার্টে হানিয়ার মুখ দেখা যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করা হয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় নেটিজেনদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রশ্ন তুলেছেন— “যখন পাকিস্তান সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে, তখন কীভাবে একটি বলিউড ছবিতে পাক অভিনেত্রীকে নেওয়া হয়?” কেউ কেউ সরাসরি দিলজিতকে বয়কটের ডাকও দিয়েছেন।
এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত দিলজিত বা ছবির প্রযোজনা সংস্থার তরফে কোনো মন্তব্য আসেনি। তবে বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, হানিয়া আমির যদি ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকেন, তবে ২৭ জুন মুক্তির তারিখ নির্ধারিত ‘সর্দার ৩’-এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
প্রসঙ্গত, অতীতে বলিউডে রাহাত ফতেহ আলি খান, আতিফ আসলাম, ফাওয়াদ খান, মাহিরা খানদের মতো বহু পাকিস্তানি শিল্পী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। কিন্তু পুলওয়ামা হামলার পর ভারতীয় চলচ্চিত্র সংগঠনগুলোর সিদ্ধান্তে বলিউডে পাক শিল্পীদের কাজ প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, পেহেলগামের ঘটনার পর থেকেই ভারতে হানিয়া আমির, মাহিরা খান, আলি জাফর, সজল আলিসহ একাধিক পাকিস্তানি তারকার সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও ব্লক করে দেওয়া হয়েছে, যা দুই দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে।