পূর্বশর্তহীন শান্তি সংলাপে আগ্রহী পুতিন, প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে কিয়েভে
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথমবারের মতো কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই সরাসরি শান্তি সংলাপ শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রোববার ক্রেমলিন থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি জানান, এই প্রস্তাব ইতোমধ্যে কিয়েভকে জানানো হয়েছে।
পুতিন বলেন, “আমরা কিয়েভের সঙ্গে সরাসরি শান্তি সংলাপে আগ্রহী, এবং এ ক্ষেত্রে কোনো শর্তারোপ করছি না। গত বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের কাছে আমাদের এই প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।” তিনি চান, এই সংলাপ তুরস্কে অনুষ্ঠিত হোক এবং এটি যেন দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পথে এগিয়ে নেয়। তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে শিগগিরই তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমাদের প্রস্তাব এখনও টেবিলে আছে। এখন সিদ্ধান্ত ইউক্রেন সরকার এবং তাদের পশ্চিমা পৃষ্ঠপোষকদের হাতে, যারা হয়তো জনগণের স্বার্থ নয়, বরং নিজেদের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা ভাবছে।”
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল এবং ২০২২ সালে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে সম্পর্ক চরমভাবে অবনতি ঘটে। রাশিয়া দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন—এই চারটি প্রদেশ দখলে নেয়, যা ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ। মস্কো চেয়েছিল, কিয়েভ এসব অঞ্চলকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিক, যা ইউক্রেন মানতে নারাজ।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে হাজার হাজার সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। একাধিকবার সংলাপ হলেও তা ব্যর্থ হয় মূলত অঞ্চল-সংক্রান্ত পারস্পরিক শর্তে অমত থাকায়।
এদিকে রাশিয়ার প্রস্তাবে কিয়েভ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। যুক্তরাষ্ট্র, যেটি শুরু থেকে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় মিত্র ছিল, তাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ক্ষমতা নেওয়ার পর যুদ্ধ থামানো তার অন্যতম অগ্রাধিকার। তবে পুতিনের সাম্প্রতিক প্রস্তাবের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এখনো কিছু জানানো হয়নি।
সূত্র: রয়টার্স