সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সিয়েরা লিওনের রাজধানী ফ্রিটাউনে অবস্থিত প্রেসিডেন্ট ভবনে শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে এই ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস মাদা বায়ো ভবনে উপস্থিত ছিলেন না, কারণ তিনি একটি সম্মেলনে অংশ নিতে তুরস্কে অবস্থান করছেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
সিয়েরা লিওনের ফায়ার সার্ভিসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, দমকল বাহিনী প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অক্লান্ত পরিশ্রমের পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। তবে আগুনে ভবনের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং আসবাবপত্র পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
দেশটির তথ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগুন প্রেসিডেন্ট ভবনের তৃতীয় এবং চতুর্থ তলায় ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এই অগ্নিকাণ্ড থেকে রক্ষা পেয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট ভবনের ওপরের তলার জানালা দিয়ে লেলিহান শিখা এবং ঘন কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এই দৃশ্য ফ্রিটাউনের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ কামারা এএফপিকে বলেন, “সন্ধ্যার দিকে আমরা ভবনের জানালা ও ওপরের তলা থেকে ধোঁয়া এবং আগুনের শিখা বের হতে দেখেছি। এটি দেখে আমরা খুবই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।”
অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ভবনের আশপাশের রাস্তা বন্ধ করে দেয় এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। দমকল কর্মীদের তৎপরতার কারণে আগুন ভবনের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারেনি।
প্রেসিডেন্ট ভবন সিয়েরা লিওনের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু। এই ভবনে আগুন লাগার ঘটনা দেশটির জন্য একটি বড় ধাক্কা। স্থানীয়রা এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং আগুনের কারণ নির্ধারণে বিস্তারিত তদন্ত চালাবে। এই ঘটনা দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
সিয়েরা লিওনের জনগণ এখন এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।
সূত্র: এএফপি