শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সকাল ৬:১২

‘মার্চ ফর গাজা’ ইতিহাসে অমর: ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

প্রতিবেদক
staffreporter
এপ্রিল ১৩, ২০২৫ ৭:৪০ অপরাহ্ণ
‘মার্চ ফর গাজা’ ইতিহাসে অমর: ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

‘মার্চ ফর গাজা’ ইতিহাসে অমর: ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ ওয়াই রামাদান ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশকে ইতিহাসের পাতায় অমর হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের এই অভূতপূর্ব সমর্থন ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য সংগ্রামের পাশে থাকার এক অতুলনীয় নজির। এই সমাবেশ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে প্রতিধ্বনিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রাষ্ট্রদূতের বিবৃতি

গত শনিবার (১২ এপ্রিল, ২০২৫) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে রাষ্ট্রদূত ইউসুফ ওয়াই রামাদান বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ঢাকার ‘মার্চ ফর গাজা’ বিশ্বকে অবাক করেছে। এটি ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের অটল সমর্থন ও সংহতির একটি শক্তিশালী ঘোষণা। এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত সীমানা পেরিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অনুপ্রাণিত করবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের নারী-পুরুষ, তরুণ-বৃদ্ধ সবাই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের সংগ্রামে শক্তি ও উৎসাহ যোগাচ্ছে। “আজকের বিশ্বে বাংলাদেশের মতো মহান জাতি খুঁজে পাওয়া কঠিন। এই জাতি ইতিহাসের সঠিক পথে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা ফিলিস্তিনের ন্যায্য সংগ্রামের পাশে দাঁড়ানোর ব্যাপারে কোনো আপস করবে না,” বলেন তিনি।

‘মার্চ ফর গাজা’র তাৎপর্য

শনিবার ঢাকায় ‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি মুভমেন্ট বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে দল-মত নির্বিশেষে লাখো মানুষ অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে এই সমাবেশে ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের পতাকা পাশাপাশি উড়তে দেখা যায়। শিক্ষার্থী, শিল্পী, ধর্মীয় নেতা, মা এবং আরও অনেকে একসঙ্গে ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার জন্য কণ্ঠ মেলান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, “ঢাকার কণ্ঠস্বর কখনো নীরব হবে না। যতক্ষণ ফিলিস্তিনি ভাই-বোনেরা দখলদারিত্ব ও অবিচারের শিকার হচ্ছেন, ততক্ষণ বাংলাদেশের এই সমর্থন অটুট থাকবে। গাজার শরণার্থী শিবির থেকে পশ্চিম তীরের জলপাই গাছ পর্যন্ত এই সংহতি অনুভূত হচ্ছে।”

বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন বন্ধুত্ব

বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের জনগণ ফিলিস্তিনের পাশে অবিচলভাবে দাঁড়িয়েছে। এই সমাবেশে অংশ নেওয়া প্রতিটি ছাত্র, শিল্পী, ইমাম এবং সাধারণ মানুষের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।” তিনি ফিলিস্তিনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “আমরা বাংলাদেশের জনগণের পাশে থাকবো। ফিলিস্তিন তার পূর্ণ অধিকার ও স্বাধীনতা ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত এই বন্ধুত্ব অটুট থাকবে।”

রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের এই সম্মানজনক অবস্থান কখনো ভুলব না। ফিলিস্তিন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক।”

সমাবেশের দৃশ্যপট

‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশে ঢাকার রাজপথে লাল-সবুজের সমুদ্র দেখা গেছে। ফিলিস্তিনের পতাকার পাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উড্ডীন ছিল। হাজার হাজার মানুষের কণ্ঠে ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার স্লোগান ধ্বনিত হয়। এই সমাবেশ শুধু একটি প্রতিবাদই নয়, বরং ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশের অটল সমর্থনের একটি প্রতীক।

ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত শেষে বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ কেবল আমাদের সমর্থক নয়, তারা আমাদের আশা, মর্যাদা এবং সংগ্রামের সঙ্গী। তাদের এই সংহতি ন্যায়বিচারের জয়ের বিশ্বাসকে জাগিয়ে রেখেছে।” এই ঐতিহাসিক সমাবেশ বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে গভীর বন্ধনের আরেকটি প্রমাণ।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি