পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন নরেন্দ্র মোদি, শিবসেনার দাবি
ভারতের রাজনৈতিক মঞ্চে একটি চাঞ্চল্যকর দাবি উঠে এসেছে। শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পদত্যাগের পরিকল্পনা করছেন এবং অবসরের পথে হাঁটতে চলেছেন। শুধু তাই নয়, তার উত্তরসূরি কে হবেন, সেই বিষয়েও আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। এমনকি পরবর্তী বিজেপি নেতা কোন রাজ্য থেকে আসবেন, তাও নাকি ঠিক হয়ে গেছে। রাউতের এই বিস্ফোরক মন্তব্য ভারতের রাজনীতিতে নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে।
রাউতের দাবি, আগামী সেপ্টেম্বরে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। তিনি এই দাবির সঙ্গে মোদির সাম্প্রতিক নাগপুর সফরকে যুক্ত করেছেন। গত রোববার, ৩০ মার্চ, মোদি নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সদর দপ্তর পরিদর্শনে যান। রাউত বলছেন, “গত ১০-১১ বছরে মোদি কখনোই আরএসএস-এর সদর দপ্তরে যাননি। এবার তিনি সেখানে গেছেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের কাছে বিদায় জানাতে। তিনি যেন বলতে গেছেন—‘টাটা, বাই, বাই’।” মুম্বাইয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাউত এই মন্তব্য করেন, যা হিন্দুস্তান টাইমস, ইন্ডিয়া টুডে-সহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
রাউত আরও বলেন, “মোদি হয়তো নাগপুরে গিয়ে তার অবসরের আবেদনপত্র জমা দিয়ে এসেছেন। আমার বিশ্বাস, আরএসএস দেশের নেতৃত্বে পরিবর্তন চায়। সমগ্র সংঘ পরিবার মনে করে, মোদির সময় শেষ হয়ে গেছে। তারা এখন পরবর্তী বিজেপি নেতা বেছে নিতে চায়।” তার দাবি অনুযায়ী, মোদির উত্তরসূরি মহারাষ্ট্র থেকে নির্বাচিত হবেন, এবং এই সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি বিজেপি ও আরএসএস-এর অভ্যন্তরীণ গতিবিধির দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
মোদি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি বিজেপির শক্তিশালী নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে রাউতের দাবি সত্যি হলে, ভারতীয় রাজনীতিতে একটি বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। তিনি বলেন, “মোদির নাগপুর সফর শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি তার রাজনৈতিক জীবনের শেষ অধ্যায়ের সংকেত।”
অন্যদিকে, বিজেপির শীর্ষ নেতা এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ রাউতের এই দাবি পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি আরও অনেক বছর দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। এ ধরনের দাবি অবান্তর এবং ভিত্তিহীন।” ফড়নবিশের এই বক্তব্যে বিজেপির অভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং মোদির প্রতি আস্থার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
রাউতের এই মন্তব্য কতটা সত্যি, তা সময়ই বলবে। তবে এটি নিঃসন্দেহে ভারতের রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় তুলেছে। সবার চোখ এখন মোদি এবং আরএসএস-এর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।