কুমিল্লায় ছাত্রদলের অফিসে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা, ভাঙচুর
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় ছাত্রদলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এই ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতি।
ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল, রাতে। বুড়িচং উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, রাত ১০টার দিকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একদল সন্ত্রাসী তাদের অফিসে হামলা চালায়। এই হামলার নেতৃত্ব দেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে সিদ্ধার্থ, ভাতিজা সুজনসহ ১০ থেকে ১৫ জন। তারা অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালায়, আসবাবপত্র তছনছ করে দেয়। এই ঘটনার পরদিন, বুধবার বিকেলে ইকবাল হোসেন ১২ জনের নাম উল্লেখ করে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ইকবাল হোসেন বলেন, “গত ৫ আগস্টের পর থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা আমাকে বারবার হুমকি দিয়ে আসছিল। মঙ্গলবার রাতে তারা হঠাৎ আমার অফিসে হামলা করে। আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে তারা এসে সবকিছু ভেঙে ফেলে। আমি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার চাই। ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা এখনো কীভাবে খোলা আকাশের নিচে ঘুরে বেড়াচ্ছে, প্রশাসনের কাছে এর জবাব চাই।” তার কথায় ক্ষোভ আর হতাশা স্পষ্ট।
এই ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে বলছেন, এ ধরনের হামলা এলাকার শান্তি নষ্ট করছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করছেন, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের এই হামলা পরিকল্পিত। তারা এটিকে তাদের ওপর আধিপত্য বিস্তারের একটি চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অন্যদিকে, অভিযুক্ত আলমগীর হোসেনের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার নম্বর বন্ধ থাকায় তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এটি ঘটনার তদন্তে আরও জটিলতা যোগ করেছে। স্থানীয়রা জানান, আলমগীর হোসেন এলাকায় বেশ প্রভাবশালী। তার নেতৃত্বে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, “ছাত্রদলের অফিসে ভাঙচুরের ঘটনায় আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।” তিনি আশ্বাস দেন, আইনের আওতায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে পুলিশের এই বক্তব্যে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন। তারা দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছেন।