সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি: মার্চ ২০২৫-এর সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
মার্চ ২০২৫-এ সিরিয়ায় উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ও সামরিক পরিবর্তন ঘটেছে, যা দেশটির ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করছে। নিচে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর সারসংক্ষেপ প্রদান করা হলো:
রাজনৈতিক পরিবর্তন ও নতুন সরকার গঠন
ডিসেম্বর ২০২৪-এ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদচ্যুতি এবং ইসলামপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (HTS) ক্ষমতা গ্রহণের পর, মার্চ ২০২৫-এ আহমেদ আল-শারাআকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২৯ মার্চ, তিনি ২৩ সদস্যের একটি মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন, যেখানে প্রযুক্তিবিদ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। যদিও এই সরকারকে অন্তর্ভুক্তিমূলক বলা হয়েছে, তবে কিছু সমালোচক মনে করছেন যে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে এবং স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে।
সামরিক সংঘাত ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি
মার্চের শুরুতে, লাতাকিয়া ও বানিয়াস শহরে আসাদপন্থী বাহিনী এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে, যেখানে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হন। এই সংঘর্ষে আলাওয়ি সম্প্রদায়ের বেসামরিক লোকজনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ১০ মার্চ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে এই সামরিক অভিযান সমাপ্ত হয়েছে, তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখনও নাজুক।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও সহায়তা
ইতালি সিরিয়ার পুনর্গঠনে সহায়তা করতে ৬৮ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করেছে, যা হাসপাতাল, স্বাস্থ্য খাত, অবকাঠামো এবং খাদ্য সরবরাহ চেইন উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। এছাড়াও, লেবানন ও সিরিয়া সীমান্ত নির্ধারণ ও নিরাপত্তা সমন্বয় বাড়াতে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা কমাতে সহায়তা করবে।=
মানবাধিকার ও শান্তি প্রচেষ্টা
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন সিরিয়ায় শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকারের প্রতি নতুন করে প্রতিশ্রুতি প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে, বিশেষ করে সংঘাতের ১৪তম বার্ষিকীতে। তবে, সাম্প্রতিক সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন।
উপসংহার
সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি জটিল ও পরিবর্তনশীল। রাজনৈতিক পরিবর্তন, সামরিক সংঘাত এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা ও প্রতিক্রিয়া দেশটির ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করছে। স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া অপরিহার্য।