আমরা কখনোই বলিনি নির্বাচনের পরে সংস্কার: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট করে বলেছেন, “আমরা কখনোই এটা বলিনি যে আগে নির্বাচন হবে, তারপর সংস্কার করা হবে। আমাদের অবস্থান সবসময়ই পরিষ্কার—একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম যে সংস্কারগুলো দরকার, সেগুলো আগে করতে হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, তাদের বক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
এই মন্তব্য তিনি করেছেন বুধবার, ২ এপ্রিল, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে। ঠাকুরগাঁও জেলা শহরে নিজের বাসভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের এক অনুষ্ঠানে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং গণতন্ত্রের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা সবসময় বলে আসছি, একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কিছু মৌলিক সংস্কার জরুরি। কিন্তু কেউ কেউ আমাদের কথাকে বিকৃত করে প্রচার করছে যে, আমরা নাকি নির্বাচনের পর সংস্কারের কথা বলছি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাই না, বরং তাদের সঙ্গে নিয়ে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়তে চাই।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিএনপির বিরুদ্ধে টার্গেট করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। “আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, জাকের পার্টি—এসব রাজনৈতিক দলের শক্তি জনগণের সমর্থনের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু যারা সংস্কারের নামে এসেছেন, তারা জ্ঞানী, পণ্ডিত, বড় বড় ডিগ্রিধারী হতে পারেন। আমরা তাদের শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। তবে তারা যদি জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে কিছু করতে চান, তাহলে আমরা তা মেনে নিতে পারব না।”
গণতন্ত্রের প্রতি বিএনপির অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “গণতন্ত্রই রাষ্ট্র পরিচালনার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা। আমরা অনেক সময় ভয় পাই যে, রাজনৈতিক দলগুলো স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু গণতন্ত্রে এমন হলে জনগণই তাদের বের করে দেয়। আওয়ামী লীগের বর্তমান অবস্থা তার প্রমাণ। জনগণের হাতে শক্তি থাকলে কেউ স্বৈরাচার হয়ে টিকে থাকতে পারে না। তাই গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই।”
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যে গণতন্ত্র ও জনগণের প্রতি তার দলের দায়বদ্ধতার কথা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা চাই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। আর সেজন্য যে সংস্কার দরকার, তা আগেই করতে হবে। এটা আমাদের দাবি ছিল, আছে এবং থাকবে।” তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, জনগণের কণ্ঠকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে, কিন্তু বিএনপি তা হতে দেবে না।
এই শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আলাপে মির্জা ফখরুল দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমাদের লড়াই জনগণের অধিকারের জন্য। এই পথে আমরা অটল থাকব।”