বিশ্বশান্তির জন্য গ্রিনল্যান্ড দখল করা প্রয়োজন – ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি একটি বিতর্কিত দাবি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, “বিশ্বশান্তি রক্ষার জন্য গ্রিনল্যান্ড আমাদের দখলে নেওয়া প্রয়োজন।” গত ২৬ মার্চ ২০২৫-এ ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন। ট্রাম্পের এই বক্তব্যে বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে। তিনি দাবি করেছেন, গ্রিনল্যান্ড শুধু আমেরিকার নিরাপত্তার জন্য নয়, পুরো বিশ্বের স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই দাবি শুনে অনেকে হতবাক, আবার অনেকে ক্ষুব্ধ।
ট্রাম্প বলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমেরিকার হাতে থাকলে আমরা বিশ্বের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারব। ডেনমার্ক এটা করতে পারে না।” তিনি গ্রিনল্যান্ডের ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক সম্পদের কথা তুলে ধরে বলেন, এটি আর্কটিক অঞ্চলে চীন ও রাশিয়ার প্রভাব মোকাবিলার জন্য অপরিহার্য। তিনি আরও জানান, গত দুই সপ্তাহে তিনি সেখানে নিরাপত্তার জন্য ‘কুকুরের দুটি ক্লাব’ স্থাপন করেছেন। তবে এই কথার অর্থ কী, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। গ্রিনল্যান্ড, যা ডেনমার্কের অধীনে আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, এখন ট্রাম্পের স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু।
ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন এই প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, “গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। এটা আমাদের জনগণের, আমাদের সংস্কৃতির অংশ।” গ্রিনল্যান্ডের স্থানীয় নেতা কিম কিলসেনও বলেছেন, “আমরা আমাদের ভূমি কারও হাতে তুলে দেব না।” স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা শান্তিতে আছি। ট্রাম্পের এই কথায় আমরা ভয় পাচ্ছি। আমাদের জীবন কি এখন অনিশ্চিত হবে?”
ট্রাম্পের এই দাবি নতুন নয়। ২০১৯ সালেও তিনি গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়েছিলেন, যা তখন হাসির খোরাক হয়েছিল। এবার তিনি এটাকে ‘বিশ্বশান্তির প্রশ্ন’ বলে নতুন মাত্রা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটা আমেরিকার জন্য নয়, বিশ্বের জন্য। কিন্তু শুধু আমরাই এটা করতে পারি।” তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে আর্কটিকের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদের লোভ রয়েছে। চীন ও রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতি বাড়ায় আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থও এতে জড়িত।
ন্যাটোর মহাসচিবও ট্রাম্পের যুক্তির প্রতি পরোক্ষ সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, “গ্রিনল্যান্ডের গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না।” কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের প্রতিক্রিয়া মিশ্র। জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা বলেন, “একটি সার্বভৌম অঞ্চলের ওপর দাবি অগ্রহণযোগ্য।” আমেরিকার ভেতরেও বিরোধিতা আছে। একজন ডেমোক্র্যাট নেতা বলেন, “ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা পাগলামি। এটা যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াবে।”