শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সন্ধ্যা ৭:২৪

গাজার নতুন প্রধানমন্ত্রীকেও হত্যা করল ইসরায়েল

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৪, ২০২৫ ৩:৪৪ অপরাহ্ণ
গাজার নতুন প্রধানমন্ত্রীকেও হত্যা করল ইসরায়েল

গাজার নতুন প্রধানমন্ত্রীকেও হত্যা করল ইসরায়েল

ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “ইসমাইল বারহুম হামাসের একজন শীর্ষ নেতা ছিলেন এবং গত ৭ অক্টোবর, ২০২৩-এর হামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। আমাদের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে লক্ষ্য করে নির্ভুল হামলা চালানো হয়েছে।” হামলায় বারহুমের সঙ্গে আরও কয়েকজন হামাস কর্মী নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিক, নারী ও শিশু রয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “রাতে হঠাৎ বিস্ফোরণে আমাদের বাড়ি কেঁপে উঠল। ধ্বংসস্তূপের নিচে লাশ আর আহতদের চিৎকার শুনেছি।”

ইসমাইল বারহুম গত সপ্তাহে এসাম আল-দালিসের মৃত্যুর পর হামাস কর্তৃক গাজার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি হামাসের রাজনৈতিক শাখার একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এবং গাজার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন। তার নিয়োগের পর হামাস এক বিবৃতিতে বলেছিল, “বারহুম আমাদের প্রতিরোধকে আরও শক্তিশালী করবেন।” কিন্তু তার এই দায়িত্ব পালনের সময় পাঁচ দিনও পেরোয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই হামলা হামাসের নেতৃত্বে ধারাবাহিকভাবে আঘাত হানার কৌশলের অংশ।

গাজার বাসিন্দারা এই হামলাকে “নৃশংসতার চূড়ান্ত” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। একজন স্থানীয় বলেন, “ইসরায়েল আমাদের নেতাদের একে একে হত্যা করছে। আমাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই—না নেতা, না বাড়ি, না আশা।” গত ১৭ মাসে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ৪৫,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। এর মধ্যে হামাসের শীর্ষ নেতারা—ইয়াহিয়া সিনওয়ার, ইসমাইল হানিয়া, মোহাম্মদ দেইফের মতো ব্যক্তিরাও রয়েছেন। বারহুমের মৃত্যু এই ধারাবাহিকতার সর্বশেষ সংযোজন।

হামাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ইসরায়েল ভেবেছে আমাদের নেতাদের হত্যা করে আমাদের ভাঙতে পারবে। কিন্তু প্রতিটি শহীদের রক্ত আমাদের আরও শক্তিশালী করে।” তারা প্রতিশোধের হুমকি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রকেট হামলা বাড়ানো হবে। এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, “গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। এই হত্যাকাণ্ড শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও দূরে ঠেলে দিচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “হামাসকে শেষ না করে আমরা থামব না।” তবে, এই হামলার ফলে গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হয়েছে। হাসপাতালে পানি ও ওষুধের অভাবে আহতরা মারা যাচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা লিখছেন, “ইসরায়েল আমাদের জীবন ধ্বংস করছে। বিশ্ব চুপ কেন?”

এই ঘটনা হামাসের নেতৃত্বের ওপর ইসরায়েলের নিরলস আক্রমণের প্রমাণ। গাজার জনগণ এখন শোকে মুহ্যমান, আর বিশ্বের নীরবতা তাদের ক্ষোভকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি