শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| ভোর ৫:০৮

৪১ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ১৬, ২০২৫ ৪:২৮ অপরাহ্ণ
৪১ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

৪১ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্প্রতি ৪১টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে। এই পদক্ষেপটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তুলনায় আরও বিস্তৃত হতে পারে।

প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞার তালিকায় দেশগুলোকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে:

পূর্ণাঙ্গ ভিসা নিষেধাজ্ঞা (লাল তালিকা): এই তালিকায় থাকা ১০টি দেশের নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। দেশগুলো হলো: আফগানিস্তান, ইরান, সিরিয়া, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, ইয়েমেন ও ভেনেজুয়েলা।

আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা (কমলা তালিকা): এই তালিকায় থাকা ৫টি দেশের নাগরিকদের নির্দিষ্ট কিছু ভিসা ক্যাটাগরিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। দেশগুলো হলো: ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার ও দক্ষিণ সুদান।

শর্তসাপেক্ষ ভিসা নিষেধাজ্ঞা (হলুদ তালিকা): এই তালিকায় থাকা ২৬টি দেশের সরকারকে ৬০ দিনের মধ্যে নিরাপত্তা তথ্য সংক্রান্ত ঘাটতি মেটানোর জন্য সময় দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে, এই দেশগুলোর নাগরিকদের ভিসায় আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। এই তালিকায় রয়েছে: বেলারুশ, পাকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, বাংলাদেশ ও ভুটান।

এই প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের সময় আরোপিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার সম্প্রসারিত রূপ। প্রথম মেয়াদে আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় প্রধানত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল, যা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। তবে সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তীতে একটি পুনর্লিখিত নিষেধাজ্ঞা অনুমোদন করে।

বর্তমান প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞা এখনো চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনুমোদনের পরই এটি কার্যকর হতে পারে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

এই প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সম্পর্ক ও অভিবাসন নীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, যেসব দেশ আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে।

এছাড়া, এই নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ওই দেশগুলোর প্রবাসীদের জন্যও উদ্বেগের কারণ হতে পারে। তাদের পরিবার ও স্বজনদের ভ্রমণ ও অভিবাসন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞার তৃতীয় তালিকায় বাংলাদেশও রয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা যেতে পারে। বাংলাদেশ সরকারকে নিরাপত্তা তথ্য সংক্রান্ত ঘাটতি মেটাতে ৬০ দিনের সময় দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে, বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসায় আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।

এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, যেখানে সরকারকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে, ভ্রমণ ও অভিবাসন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় থাকে।

মার্কিন প্রশাসনের এই প্রস্তাবিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে। নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতিতে কঠোরতা আরোপের এই প্রবণতা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও বৈশ্বিক অভিবাসন প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে। প্রত্যেক দেশের উচিত তাদের নিরাপত্তা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করা, যাতে এমন নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে না হয়।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি