ট্রাম্পের গাজা দখলের পরিকল্পনা থেকে সরে আসাকে স্বাগত জানাল হামাস
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার এই অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস।
আন্তর্জাতিক সম্প্রচার মাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার (১২ মার্চ) হোয়াইট হাউসে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাইকেল মার্টিনের সঙ্গে বৈঠকের সময় ট্রাম্প বলেন, “গাজা থেকে কাউকে বহিষ্কার করা হবে না।”
মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই অবস্থানের প্রশংসা করে হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম বলেন,
“যদি ট্রাম্পের বক্তব্যের অর্থ হয় যে গাজার জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার পরিকল্পনা থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে এসেছে, তবে এটি অবশ্যই স্বাগতযোগ্য।”
তবে হামাস আরও জোরালো পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে বলেছে, ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতির সব শর্ত বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে। গোষ্ঠীটি বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজার নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
এই ঘোষণার পর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহলেও ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে ‘একটি আধুনিক উপনিবেশবাদী ধারণা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল অনেক বিশ্লেষক।
বিশ্লেষকদের মতে, তীব্র আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ট্রাম্প প্রশাসন তাদের নীতিতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে, গাজার ভবিষ্যৎ ও পুনর্গঠন নিয়ে কাতারের রাজধানী দোহায় আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে।
মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি আরব দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে গাজার জন্য মিশরের পুনর্গঠন পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে, ইসরাইলের অবরোধের কারণে গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
অবরোধের ১২ দিন অতিক্রম হয়েছে, শুরু হয়েছে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকট। ত্রাণ সহায়তা বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ অনাহারে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দ্রুত যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও অবরোধ প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও ইসরাইল এখন পর্যন্ত এতে সাড়া দেয়নি।
বিশ্ব নেতারা গাজার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে গেলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অবস্থান না বদলালে সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।