শনিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫| সকাল ৬:১০

ইয়েমেনের বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা

প্রতিবেদক
staffreporter
মার্চ ২৩, ২০২৫ ৪:৪৪ অপরাহ্ণ
ইয়েমেনের বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা

ইয়েমেনের বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা

ইয়েমেনের রাজধানী সানার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলা বিশ্ববাসীকে চমকে দিয়েছে। শনিবার (২২ মার্চ, ২০২৫) রাতে চালানো এই হামলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং বেসামরিক জীবন বিপন্ন হয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, এই হামলায় কমপক্ষে ২ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলার সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস সানা বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন, এবং তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন। এই ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, রাতের আকাশে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে উঠে সানা শহর। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া বোমা বিমানবন্দরের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। হুথি নিয়ন্ত্রিত আল মাসিরাহ টিভি জানিয়েছে, এই হামলায় বিমানবন্দরের রানওয়ে, টাওয়ার এবং কাছাকাছি এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। হামলার লক্ষ্য ছিল হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক ঘাঁটি, যারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে। তবে বেসামরিক মানুষের উপস্থিতি এই হামলাকে বিতর্কের মুখে ফেলেছে।

ডব্লিউএইচও প্রধান তেদ্রোস সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, “আমি একটি বিমানে উঠতে যাচ্ছিলাম, হঠাৎ বোমা হামলা শুরু হয়। আমাদের একজন ক্রু আহত হয়েছেন, বিমানবন্দরে ২ জন নিহত হয়েছেন।” তিনি এই হামলাকে “মানবিক বিপর্যয়” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলার পর ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া আর চিৎকার ছাড়া কিছুই শোনা যাচ্ছিল না।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, এই হামলা হুথিদের রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন স্থাপনা ধ্বংসের জন্য ছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “লোহিত সাগরে আমাদের জাহাজে হামলার জন্য হুথিদের ওপর নরকের বৃষ্টি নামবে।” তবে হুথি নেতারা পাল্টা হুমকি দিয়েছেন, “এই আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হবে। আমরা প্রস্তুত।”

ইয়েমেনে চলমান সংঘাতে এই হামলা নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “ইয়েমেনে সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।” স্থানীয়দের মতে, এই হামলা শুধু ধ্বংসই ডেকে আনেনি, বরং মানবিক সংকটকে আরও গভীর করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান-সমর্থিত হুথিদের মধ্যে সরাসরি সংঘাতের সূচনা হতে পারে।

সানার রাস্তায় এখন শোক আর ক্ষোভের ধ্বনি। হামলার পর স্থানীয়রা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে ছুটছেন। প্রশ্ন উঠছে—এই রক্তপাত কবে থামবে?

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি