বাংলাদেশিদের জন্য চীনের কুনমিংয়ে উন্নত চিকিৎসার দ্বার উন্মোচন
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আওতায় চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য চিকিৎসা সেবা উন্মুক্ত করেছে চীন সরকার। সোমবার (১০ মার্চ) ঢাকা থেকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে একটি দল কুনমিং চাংশুই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
রাষ্ট্রদূত জানান, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশিদের জন্য স্বল্প সময়ে ও যৌক্তিক খরচে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি, এটি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বৃদ্ধি ও পারস্পরিক সম্প্রীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচনে ভূমিকা রাখবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অচিরেই কুনমিং বাংলাদেশি রোগীদের জন্য একটি আধুনিক চিকিৎসা গন্তব্য হিসেবে পরিচিত হবে।
ইউনান প্রাদেশিক পররাষ্ট্র দফতরের মহাপরিচালক ইয়াং শাওচেং কুনমিংয়ে চিকিৎসা নিতে আসা বাংলাদেশি দলকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ও ইউনানের জনগণের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে চিকিৎসা সহযোগিতার এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পরদিন (১১ মার্চ) রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম বাংলাদেশি রোগী, সাংবাদিক ও ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে ইউনান ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতাল এবং ফু-ওয়াই কার্ডিওভাস্কুলার হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশি রোগীদের খোঁজখবর নেন এবং দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সঙ্গে তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি ফু-ওয়াই কার্ডিওভাস্কুলার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বাংলাদেশি তিন শিশুকে উপহার দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মাননীয় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন চীন সফরের সময় বাংলাদেশিদের জন্য কুনমিংয়ে চিকিৎসা সেবা উন্মুক্ত করার প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করেন। চীন সরকার এই প্রস্তাব গ্রহণ করে কুনমিংয়ের চারটি অত্যাধুনিক হাসপাতালকে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করে। এর মধ্যে কুনমিং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হাসপাতাল ও ইউনান ফার্স্ট পিপল’স হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা পাওয়া যাবে, আর ফু-ওয়াই কার্ডিওভাস্কুলার হাসপাতাল ও ইউনান ক্যান্সার হাসপাতাল বিশেষায়িত হৃদরোগ ও ক্যান্সার চিকিৎসা দেবে।
বাংলাদেশি নাগরিকরা এখন সরাসরি এসব হাসপাতালের আন্তর্জাতিক ওয়ার্ডে যোগাযোগ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারবেন এবং নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারবেন। এই উদ্যোগের ফলে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি নাগরিক উন্নত চিকিৎসার জন্য কুনমিং সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চিকিৎসা পর্যটন সহজ করতে কুনমিং ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু এবং ঢাকা-কুনমিং রুটে একাধিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।