দক্ষিণ চীন সাগরে চর দখলে নিলো বেইজিং
দক্ষিণ চীন সাগরের একটি ছোট বালুচর দখল করেছে *চীনা কোস্টগার্ড। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে **ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এর ফলে, *চীন এবং ফিলিপাইন-এর মধ্যে আঞ্চলিক বিরোধের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
চীনা পতাকা উড়িয়ে নতুন দাবি
চীনের সরকারি টেলিভিশন সিসিটিভি সম্প্রতি একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে চারজন চীনা কোস্টগার্ড সদস্য কালো পোশাক পরিধানে স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জের বিতর্কিত স্যান্ডি কেতে চীনের জাতীয় পতাকা উড়াচ্ছেন।
সিসিটিভি জানায়, এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই চীন এই অঞ্চলে “সামুদ্রিক নিয়ন্ত্রণ কার্যকর” এবং “সার্বভৌম কর্তৃত্ব” প্রয়োগ করছে।
দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপ ও পানিসীমা নিয়ে বিরোধ
চীন ও ফিলিপাইন উভয় দেশই *স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জসহ দক্ষিণ চীন সাগরের নানা দ্বীপ ও পানিসীমার ওপর অধিকার দাবি করে আসছে। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে *ফিলিপাইনও তিনটি বালুচরে নিজেদের পতাকা স্থাপন করেছে এবং চীনের ছবির মতো নিজেদের বাহিনীর ছবি প্রকাশ করেছে। তবে, ফিলিপাইনের বাহিনী যেসব বালুচরে পৌঁছেছে, তার মধ্যে স্যান্ডি কেতে তারা ছিল কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
চীনের অবৈধ উপস্থিতি দাবি
ফিলিপাইনের ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স ওয়েস্ট ফিলিপাইন সি জানায়, তারা একটি চীনা কোস্টগার্ড জাহাজ এবং সাতটি চীনা মিলিশিয়া নৌযান দেখতে পেয়েছে, যা তারা “চীনের অবৈধ উপস্থিতি” হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এতে তারা আরও জানায়, “এই অভিযান আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব, অধিকার এবং কর্তৃত্ব রক্ষার প্রতিশ্রুতি ও দৃঢ়তার প্রমাণ।”
উত্তেজনা বাড়ছে, আগের ঘটনাগুলোর পুনরাবৃত্তি
দক্ষিণ চীন সাগরে এই নতুন উত্তেজনার মাঝে আগের মতো জাহাজ সংঘর্ষ এবং *হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। *বিবিসি জানায়, *স্যান্ডি কে দ্বীপটি *ফিলিপাইনের থিটু দ্বীপের (স্থানীয়ভাবে পাগ-আসা নামে পরিচিত) কাছাকাছি অবস্থিত, যেখানে ফিলিপাইনের একটি সামরিক ফাঁড়ি রয়েছে এবং তারা দক্ষিণ চীন সাগরের চীনা নৌচলাচল পর্যবেক্ষণ করে।
তবে, চীনা কোস্টগার্ড সদস্যরা স্থানটি ছেড়ে চলে গেছে এবং এখন পর্যন্ত সেখানে স্থায়ী দখলদারিত্বের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
চীনের এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। *ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে, *যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জেমস হিউইট বলেন, “এ ধরনের কর্মকাণ্ড আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।”
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করছে এই পরিস্থিতি মোকাবেলায়।
দক্ষিণ চীন সাগরের এই বিরোধের মাঝে, আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর একে অপরকে চ্যালেঞ্জ জানানো ও একে অপরের কার্যকলাপের প্রতি নজর রাখা ভবিষ্যতে পরিস্থিতির আরও উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে