বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ের মানচিত্র নিয়ে চীনের আপত্তি
বাংলাদেশের পাঠ্যবই নিয়ে প্রায় প্রতি বছরই নানা বিতর্ক ও সমালোচনা ওঠে। তবে এবারের বিতর্ক আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গড়িয়েছে। চীন আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ তুলেছে, বাংলাদেশের দুটি পাঠ্যবইতে থাকা এশিয়ার মানচিত্রে তাদের ভূখণ্ড ভুলভাবে ভারতের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কূটনৈতিক সূত্র জানায়, চীন দাবি করেছে, বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ের মানচিত্রে তাদের জ্যাংনান অঞ্চলকে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ হিসেবে এবং আকসাই চীন অঞ্চলকে জম্মু ও কাশ্মিরের অংশ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। শুধু পাঠ্যবই নয়, বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটেও একই ধরনের মানচিত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বেইজিং।
চীনের পক্ষ থেকে গত বছরের নভেম্বরের শেষদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে একটি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, জ্যাংনান এবং আকসাই চীন বহু বছর ধরেই চীনের অংশ এবং আন্তর্জাতিক মানচিত্রেও এভাবে চিহ্নিত। কিন্তু বাংলাদেশের পাঠ্যবইয়ে এই দুটি ভূখণ্ড ভারতের অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়েছে, যা চীনের সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী।
এছাড়া নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে হংকং ও তাইওয়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। চীন এই তথ্যকেও ভুল দাবি করে বলেছে, হংকং ও তাইওয়ান চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, আলাদা কোনো অর্থনৈতিক সত্তা নয়।
চীনের আপত্তির পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সঙ্গে আলোচনা করে। তবে এনসিটিবি জানিয়েছে, নতুন পাঠ্যবই ইতোমধ্যে ছাপা হয়ে গেছে, ফলে তাৎক্ষণিকভাবে এসব মানচিত্র সংশোধন করা সম্ভব নয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ ধরনের পরিবর্তন আনা কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবে চীনকে অনুরোধ করেছে, এই ইস্যুতে আপাতত চাপ না দিতে। ঢাকার পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন সংস্করণের বই প্রকাশের সময় বিষয়টি সমন্বিতভাবে সমাধান করা হবে।