লস অ্যাঞ্জেলেসে আবারও ভয়াবহ দাবানল: বিপর্যস্ত ৩১,০০০ বাসিন্দা
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে নতুন করে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ জানুয়ারি) শুরু হওয়া এই আগুন মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ৯,৪০০ একরের বেশি এলাকা গ্রাস করেছে। প্রচণ্ড শুষ্ক বাতাস ও ঝোপ-ঝাড়ের কারণে দাবানল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য ৩১,০০০ জনকে বাধ্যতামূলকভাবে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও ২১,০০০ বাসিন্দাকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে তাদেরও স্থানান্তরিত হতে হতে পারে।
দাবানল প্রথমে লেক হিউজেস রোড থেকে শুরু হয় এবং মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই ৫০০ একর এলাকা জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এই অগ্নিকাণ্ড দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার তীব্র শুষ্ক জলবায়ুর কারণে দ্রুত বড় আকার ধারণ করে। এটি ইয়াটন ফায়ারের মতো বিধ্বংসী বলে মনে করা হচ্ছে, যা লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ দাবানল হিসেবে পরিচিত।
ক্যালিফোর্নিয়ার দমকল বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ইতোমধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসে অতীতের বড় দাবানলগুলোর বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিল। তবে এবার তীব্র শুষ্ক ঝোড়ো বাতাসের কারণে দাবানল নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হতে পারে।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় গত ৯ মাসে উল্লেখযোগ্য কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। এই শুষ্ক পরিবেশ দাবানল বাড়ার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে, আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এটি সত্যি হয়, তাহলে দাবানল নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনীর প্রচেষ্টায় কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দাবানলের ভয়াবহতার কারণে ক্যাসটেইক লেক এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং অবকাঠামো মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। অনেক জায়গায় সম্পত্তি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই দাবানল আরও কয়েকদিন ধরে চলতে পারে এবং এর ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে বারবার দাবানলের ঘটনা জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুতর প্রভাবের ইঙ্গিত দেয়। ক্রমবর্ধমান উষ্ণতা, বৃষ্টির অভাব, এবং শুষ্ক বাতাসের ফলে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে। দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার এই দাবানল শুধু পরিবেশের ক্ষতি করছে না, বরং মানুষের জীবন ও সম্পত্তির ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।