রবিবার, ৮ই জুন, ২০২৫| রাত ৯:৩৯

হিলিতে ঈদের দিনে চামড়া বিক্রি করে লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

প্রতিবেদক
staffreporter
জুন ৮, ২০২৫ ১১:১৬ পূর্বাহ্ণ
হিলিতে ঈদের দিনে চামড়া বিক্রি করে লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

হিলিতে ঈদের দিনে চামড়া বিক্রি করে লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

দিনাজপুরের হিলিতে ঈদুল আজহার দিনে পশুর চামড়া কিনে কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। কেউ আশানুরূপ দাম না পেয়ে লোকসানে পড়েছেন, আবার কেউ মূলধন ফেরত পাবেন কি না, তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

ঈদের দিন শনিবার (৭ জুন) দুপুরের পর থেকে হিলির মুন্সিপাড়ার চামড়াপট্টিতে ভিড় করেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তারা গরুর চামড়া নিয়ে এসে বিভিন্ন দোকানে ঘুরে ঘুরে দাম যাচাই করে বিক্রি করতে চাইলেও অনেকেই সন্তোষজনক দাম পাননি। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকে।

ভ্যানচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি ২০০ টাকা দিয়ে একটি চামড়া কিনেছেন। কিন্তু হিলিতে এসে কেউ বলছে ১০০ টাকা, আবার কেউ একেবারেই কিনতে রাজি হচ্ছেন না। তার মতে, “লাভ তো দূরের কথা, নিজের টাকাই উঠে আসবে কি না, তা নিয়েই সন্দেহ।”

বিক্রেতা ইয়াসিন আলী বলেন, “আমি গড়ে ৬০০ টাকা করে চামড়া কিনেছি। কিন্তু হিলিতে এনে দেখি কেউ ওই দাম বলছে, আবার কেউ চামড়ার মান খারাপ বলে মাত্র ১০০ টাকা দিতে চাচ্ছে। এতে তো লোকসান হবেই।”

আরেক বিক্রেতা তারিকুল ইসলাম জানান, তিনি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে চামড়া কিনেছেন। সরকারি ঘোষণায় ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকা পর্যন্ত দাম নির্ধারণ থাকলেও বাস্তবে বাজারে কেউ সে দাম দিচ্ছে না। বরং অনেকে ১০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে দাম বলছেন, কেউ কেউ আবার কিনতেও চাইছেন না।

চামড়াপট্টির আড়তদার আমজাদ মুন্সি জানান, পাইকারদের অনাগ্রহে তারাও চামড়া কিনতে ভয় পাচ্ছেন। নগদ লেনদেনে সংকট দেখা দিয়েছে, আর বাজারে দামও অনেক কম। তিনি বলেন, “কোথায় সমস্যা হয়েছে, তা বুঝে উঠতে পারছি না।”

অন্য এক ব্যবসায়ী স্বপন মুন্সি জানান, এবার চামড়ার আমদানি ভালো হলেও প্রচণ্ড গরমে লবণ না দিলে চামড়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। কোরবানিদাতারা যেন দ্রুত লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করেন, এমন অনুরোধও জানান তিনি।

চামড়া বাজারে সংকটের পেছনে যেসব কারণ উঠে এসেছে তা হলো—পাইকারি পর্যায়ে নগদ লেনদেনের ঘাটতি, গরমের কারণে দ্রুত চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা, এবং স্থানীয়ভাবে যথাযথ প্রক্রিয়াজাতকরণ বা সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকা। ফলে গ্রামে বেশি দামে কিনে শহরে এসে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত ১,০০০ থেকে ১,২০০ টাকার দাম শুধু কাগজে-কলমে আছে, বাস্তবে সে অনুযায়ী দাম মিলছে না। বরং অনেক ক্ষেত্রেই চামড়া কেউ নিতে চাচ্ছেন না, যা তাদের আর্থিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

মন্তব্য করুন
Spread the love

সর্বশেষ - বানিজ্য ও অর্থনীতি