বাউফলে যুবদল নেতার ইয়াবা সেবনের ভিডিও ভাইরাল
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের এক শীর্ষ নেতার ইয়াবা সেবনের দৃশ্য ধরা পড়া একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। এই ভিডিওতে যাকে দেখা যাচ্ছে, তিনি বাউফল উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান পলাশ বলে দাবি করা হচ্ছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।
ভিডিওটি প্রথম প্রকাশ পায় শুক্রবার, ৪ এপ্রিল। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এটি হাজার হাজার মানুষের নজরে চলে আসে। প্রায় চার মিনিট দুই সেকেন্ডের এই ভিডিওতে একটি ঘরের ভেতরের দৃশ্য ধরা পড়েছে। এতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি সাদা গেঞ্জি পরে খাটের ওপর বসে আছেন। তার বাম হাতে একটি ফয়েল পেপার আর ডান হাতে গ্যাসলাইট। মুখে একটি চিকন পাইপের মতো বস্তু দুই ঠোঁটে চেপে ধরে তিনি ধোঁয়া টানছেন। ফয়েল পেপারের নিচে গ্যাসলাইট দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে উপরের বস্তু গরম করে ধোঁয়া গ্রহণের পুরো প্রক্রিয়াটি স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্য স্থানীয়দের মধ্যে হতবাক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।
এই ভিডিও নিয়ে মশিউর রহমান পলাশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এর সত্যতা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণ সাজানো এবং ভিত্তিহীন। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার জন্য কেউ পরিকল্পিতভাবে এই ভিডিও বানিয়ে ছড়িয়েছে। আমি এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।” তার দাবি, এটি তার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র।
এদিকে, বাউফল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ পলাশের পক্ষ নিয়ে বলেছেন, “পলাশ খুব ভালো ছেলে। আমার জানা মতে, এই ভিডিও আগের কোনো সময়ের, যেটা এডিট করে নতুন করে হয়রানির জন্য প্রচার করা হচ্ছে।” তিনি এটিকে পুরোনো ঘটনা বলে দাবি করলেও ভিডিওর প্রকৃত সময় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, “একজন রাজনৈতিক নেতার কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করা যায় না।” আবার কেউ বলছেন, “এটা সত্যি কি না, তা তদন্তের পরই বোঝা যাবে।” সামাজিক মাধ্যমে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলছে। অনেকে পলাশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ তার পক্ষ নিয়ে এটিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
এই ঘটনা বাউফলের রাজনৈতিক মহলে ঝড় তুলেছে। যুবদলের একজন নেতার এমন কথিত কাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয়রা জানান, “এটা শুধু পলাশের ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এর প্রভাব পড়বে পুরো দলের ওপর।” তবে এখন পর্যন্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ে এখনো কোনো আইনি তদন্ত শুরু হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। পলাশের আইনি পদক্ষেপের হুমকির পর এটি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে।