ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে নেতানিয়াহুকে সতর্ক করলেন ট্রাম্প
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল—এমন তথ্য সামনে আসার পর ইসরায়েলকে সরাসরি সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নতুন তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল আক্রমণের পরিকল্পনা করছে, আর এ খবর পাওয়ার পরই ট্রাম্প এমন পদক্ষেপ নেন।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এখন ইরানে হামলার সময় নয়। তিনি বলেন, “আমরা ইরানের সঙ্গে একটি নতুন পরমাণু চুক্তির খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছি।”
ট্রাম্প আরও জানান, তাঁর প্রশাসন ওমান এবং ইতালিতে ইরানের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেছে এবং বর্তমানে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা চলছে। এই পরিস্থিতিতে সামরিক হামলা হলে পুরো আলোচনা ভেস্তে যেতে পারে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। তবে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, হামলা হলে তারা কঠোর জবাব দেবে।
আল জাজিরা বলছে, কয়েক দফা বৈঠকের পর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে নতুন একটি চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া বক্তব্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই ইরানি কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের জব্দকৃত অর্থ ফিরিয়ে দেয় এবং বেসামরিক ব্যবহারের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকার মেনে নেয়, তাহলে ইরান এক বছরের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ রাখতে পারে।
তাদের মতে, “ওয়াশিংটন এই শর্তগুলো মেনে নিলে দ্রুতই একটি রাজনৈতিক সমঝোতা সম্ভব হতে পারে।” যদিও প্রস্তাবটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএ-এর প্রধান রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি বলেন, আলোচনার ফল এখনও অনিশ্চিত হলেও, এর ধারাবাহিকতা ইতিবাচক। তিনি বলেন, “দুই পক্ষই যদি আলোচনায় আগ্রহী থাকে, তাহলে সমঝোতার সম্ভাবনা থেকেই যায়।”
উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি অনুযায়ী ইরান তার কর্মসূচিতে সীমা আরোপ করেছিল এবং এর বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরে যাওয়ায় আবার উত্তেজনা বাড়ে।
যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে যেকোনো নতুন চুক্তিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধের দাবি জানাচ্ছে। তবে ইরান জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক উদ্দেশ্যে, তাই তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের অধিকার ছাড়তে রাজি নয়, কারণ এটি তাদের জাতীয় অধিকার।