পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে স্কুলবাসে আত্মঘাতী হামলা, নিহত ৫
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের খুজদার এলাকায় ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় পাঁচজন প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার (২১ মে) সকালে একটি সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলের বাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশু ও দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩৮ জন।
খুজদারের সরকারি কর্মকর্তা ইয়াসির ইকবাল দস্তি জানিয়েছেন, হামলার সময় বাসটি আর্মি পাবলিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করছিল। তিনি জানান, বাসটি চলন্ত অবস্থায় ছিল এবং তখনই এক আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটায়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ‘ভারতের প্রক্সিদের ষড়যন্ত্র’ বলে দাবি করেছে, যদিও তারা কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও এ হামলার নিন্দা জানিয়ে ভারতকে দায়ী করেছেন। তবে ভারত এসব অভিযোগ নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
বেলুচিস্তানে এর আগে এমন হামলার দায় বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) স্বীকার করলেও আজকের হামলার দায় এখনো কেউ স্বীকার করেনি। স্থানীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, স্কুলবাসে হামলার মতো ঘটনা খুবই স্পর্শকাতর, যা পাকিস্তানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে।
পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেছেন, “নির্দোষ শিশুদের ওপর হামলা চালিয়ে শত্রুরা আবারও প্রমাণ করল, তারা মানবতাবিরোধী। এ ধরনের হামলা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চেষ্টা।”
প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ বেলুচিস্তান প্রদেশ দীর্ঘদিন ধরেই দারিদ্র্য, বঞ্চনা ও রাজনৈতিক বৈষম্যের অভিযোগে সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। এসব গোষ্ঠী স্বাধীন বেলুচ রাষ্ট্রের দাবিতে লড়াই করে আসছে। পাকিস্তান বরাবরই দাবি করে আসছে, এসব গোষ্ঠী ভারতীয় সমর্থনে operates করে, যদিও নয়াদিল্লি তা বরাবরই অস্বীকার করেছে।
আলজাজিরার ইসলামাবাদ প্রতিনিধি কামাল হায়দার জানিয়েছেন, পাকিস্তান সরকার এই হামলাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে এবং এর পেছনের ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, “বেলুচিস্তানে এর আগেও ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেমন গত মার্চে এক ট্রেন ছিনতাইয়ে ৩৩ জন নিহত হয়, যেটির দায়ও এক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী নেয়।”
সূত্র: আলজাজিরা