উচ্চ রক্তচাপের গোপন সংকেত: সতর্ক থাকুন এখনই
উচ্চ রক্তচাপ, যাকে হাইপারটেনশনও বলা হয়, বিশ্বজুড়ে অকাল মৃত্যু ও হৃদরোগের অন্যতম প্রধান কারণ। এটি এক ধরনের নীরব ঘাতক, যা দীর্ঘদিন ধরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে — বিশেষ করে মস্তিষ্ক, হৃদপিণ্ড ও কিডনি। পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় অর্ধেক মানুষই উচ্চ রক্তচাপে ভুগলেও অনেকেই তা জানেন না। তাই এর প্রাথমিক সতর্কতা সংকেতগুলো চিনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। যদিও অনেক সময় এটি নিঃশব্দেই শরীরের ক্ষতি করে, তবু কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।
প্রথমত, ঘন ঘন মাথাব্যথা উচ্চ রক্তচাপের একটি সাধারণ উপসর্গ হতে পারে, বিশেষ করে যদি তা সকালবেলা হয় এবং ওষুধ সত্ত্বেও না কমে। এই ধরণের মাথাব্যথা মস্তিষ্কের রক্তনালীগুলোর অতিরিক্ত চাপের ইঙ্গিত হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, মাথা ঘোরা বা হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা উচ্চ রক্তচাপের একটি সতর্ক সংকেত। যখন রক্তচাপ অনেক বেড়ে যায়, তখন শরীরের অঙ্গগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন না পেয়ে মাথা ঘোরার মতো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।
তৃতীয়ত, দৃষ্টিশক্তি পরিবর্তন যেমন ঝাপসা দেখা, দ্বিগুণ দেখা বা হঠাৎ দৃষ্টি হ্রাস হওয়া, চোখের রেটিনায় রক্তনালীর ক্ষতির ফলে ঘটে থাকে, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলে হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি। চিকিৎসা না করালে এটি স্থায়ী দৃষ্টিহীনতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
চতুর্থত, শ্বাসকষ্টও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। ফুসফুসে তরল জমে যাওয়ার কারণে শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে, এমনকি বিশ্রাম অবস্থায়ও। এটি হৃদযন্ত্রের ওপর অতিরিক্ত চাপের ফলাফল।
সবশেষে, বুকে অস্বস্তি বা ব্যথা হলে তা কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়। এটি এনজাইনা, এমনকি হার্ট অ্যাটাকের পূর্বাভাসও হতে পারে। যদি বুকে ব্যথার সঙ্গে ঘাম, বমি বমি ভাব বা বাহুতে ব্যথা যুক্ত হয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসা নিতে হবে।
এই উপসর্গগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা, সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং মানসিক চাপ কমিয়ে চলা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। মনে রাখুন, সচেতনতাই সুস্থ জীবনের প্রথম ধাপ।